কলকাতা: কোনও দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছতে হলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ক্রমাগত এগিয়ে যেতে হবে, বলেছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিশিষ্ট বিজ্ঞানী এপিজে আব্দুল কালাম। সেই সময় তিনি 'ইন্ডিয়ান স্পেস ইনস্টিটিউট'-এ কর্মরত। আজ, ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন বা ইসরো (ISRO Chief) বিশ্বমঞ্চে স্বমহিমায় উজ্জ্বল। তার চেয়ারম্যান এস সোমনাথের (S Somenath) তত্ত্বাবধানে চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল ভাবে ল্যান্ড করেছে। কিন্তু যাঁর নেতৃত্বে এই সাফল্য, তিনি কি প্রাপ্য পারিশ্রমিক পান? এই নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা। বিশেষত আরপিজি গ্রুপের অধিকর্তার ট্য়ুইটে এই বিতর্ক আরও বেড়েছে। 


নাসার বিজ্ঞানীর নিরিখে কোথায়?
সপ্তম বেতন কমিশনের বিচারে, ইসরো প্রধানের মাসিক বেতন আড়াই লক্ষ টাকা। এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আরও কিছু সুযোগসুবিধার অধিকারী তিনি। যেমন, বাড়ি, গাড়ি ও যাতায়াত বাবদ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তাঁর। এছাড়া ওয়াই প্লাস লেভেল নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন এস সোমনাথ। কিন্তু যে গুরুদায়িত্ব নিয়ে তিনি কাজ করছেন, তার সাপেক্ষে এই বেতন ও সুযোগসুবিধা কি যথেষ্ট? এই নিয়ে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীদের বেতনের সঙ্গে তুলনা উঠে এসেছে। একটি সূত্রের দাবি, নাসা তার বিজ্ঞানীদের বছরে ৭২ হাজার ৪১৬ মার্কিন ডলার পারিশ্রমিক দেয়। ভারতীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ৫৭ লক্ষ টাকা। তফাতটা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট, বলে মনে করছেন অনেকে।


ইসরোর বিজ্ঞানীদের বেতন...
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা কে কত বেতন পাবেন, তা নির্ভর করে তাঁদের পদের উপর। পিওন থেকে বিজ্ঞানী, বিভিন্ন পদের জন্য নিয়োগ করা হয়। এক এক পদে নিয়োগের জন্য এক এক রকম পরীক্ষা রয়েছে। এবার ধরা যাক, কোনও ব্যক্তি ইসরোয় ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দিলেন। সেক্ষেত্রে তাঁর বেতন ৩৭ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ৬৭ হাজার টাকার মধ্যে হওয়ার কথা। কিন্তু যাঁরা সিনিয়র সায়েন্টিস্ট পদে যোগ দেবেন, তাঁদের বেতন আবার শুরুতেই ৭৫ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করবে। এক্ষেত্রে একটি বিষয় খেয়াল রাখার। এই সব অঙ্কই কিন্তু 'বেসিক পে'। এর সঙ্গে নানা ধরনের অ্যালাওয়েন্স বা ভাতা যোগ হয়ে বেতন প্রায় লক্ষ টাকার কাছাকাছি পৌঁছে যায়। 
এখন প্রশ্ন হল, যাঁরা দেশকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উন্নতির পথে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের জন্য কতটা পারিশ্রমিক পর্যাপ্ত? অনেকের মতে, এর কোনও সঠিক উত্তর হয় না। তবে একটি বিষয় মনে রাখা দরকার। এই ধরনের কাজে মেধাবী মানুষ যত আসবেন, তত দেশের মঙ্গল। তাই বেতন পরিকাঠামো সে দিকে মাথায় রেখে তৈরি করলে ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করতে পারলে দেশের 'সম্পদ' দেশে রাখার চেষ্টা করা সম্ভব।  


আরও পড়ুন:"দুবাইতে কিছু আইন আছে যেখানে বেআইনি টাকা সাইফন হয়", মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরকে বিঁধলেন শুভেন্দু