নয়াদিল্লি: একবার নয়, দু’বার নয়, বার বার করে নিজেকে ‘নোবেল শান্তি পুরস্কারে’র অধিকারী বলে দাবি করেছেন তিনি। এবার সেই লক্ষ্যের আরও কাছাকাছি পৌঁছে গেলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গাজ়ায় ২০ দফার শান্তি প্রস্তাব থেকে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ক্ষমা চাওয়ানো, গত ৪৮ ঘণ্টায় বেনজির কাজকর্ম করে দেখিয়েছেন তিনি। আর তাতেই ট্রাম্পের নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনা আরও জোরাল হল বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। (Nobel Peace Prize)
হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাতের পরই গাজ়ায় শান্তি ফেরানোর ২০ দফার প্রস্তাব পেশ করা হয় ট্রাম্পের তরফে। সেই সঙ্গে হোয়াইট হাউস জানায়, কাতারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন নেতানিয়াহু। চলতি মাসেই দোহায় হামাস নেতাদের বৈঠক চলাকালীন সেখানে বোমা নিক্ষেপ করে ইজরায়েল। এমন একতরফা আগ্রাসনের জন্য কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মহম্মদ বিন আবদুলরহমান বিন জসিম আল থানির কাছে নেতানিয়াহু ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানানো হয়। (Donald Trump)
নেতানিয়াহু ক্ষমা চেয়েছেন বলে প্রথমে কেউই বিশ্বাস করেননি। কিন্তু হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রথম পদক্ষেপে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু অনুতপ্ত যে হামাসকে লক্ষ্য করে কাতারে ইজরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে পড়ে এবং তাতে কাতারের এক কর্মী মারা যান। পণবন্দিদের নিয়ে আলোচনার সময় হামাস নেতৃত্বকে নিশানা করার জন্যও অনুতপ্ত উনি, কারণ তাতে কাতারের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হয়েছে। ভবিষ্যতে ইজরায়েল এমন কাজ আর করবে না বলে জানিয়েছেন উনি’।
এর পরই গাজ়ায় শান্তি ফেরানোর পক্ষে ২০ দফার প্রস্তাব পেশ করে হোয়াইট হাউস। জানানো হয়, গাজ়া থেকে কাউকে তাড়ানো হবে না। গাজ়ার কোনও জায়গা দখল করে থাকতে পারবে না ইজরায়েল। হামাসের লোকজন অস্ত্র ত্যাগ করলে তাঁদের ক্ষমা করে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে অধিকাংশ দেশ। ভারত এবং পাকিস্তানও গাজ়ায় শান্তি ফেরোনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সৌদি আরব, কাতার, জর্ডন, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তানের ট্রাম্পের নেতৃত্বগুণের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। গাজ়ায় যুদ্ধসমাপ্তিতে তাঁর ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে তারা। হোয়াইট হাউসের তরফে দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে দাবি করা হয়।
আর তাতেই ট্রাম্প নোবেলের পাওয়ার দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। এমনকি ট্রাম্প নিজেও ফের সেই নিয়ে মুখ খুলেছেন। মঙ্গলবার আমেরিকার সেনাকর্তাদের একটি অনুষ্ঠানে নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে ফোন করা হয় তাঁকে। জানতে চাওয়া হয়, ‘আপনি কি নোবেল পাবেন?’ জবাবে ট্রাম্প বলেন, “একদমই পাব না। অন্য কাউকে দিয়ে দেবে ওরা, যারা কিচ্ছুটি করেনি। তেমন হলে আমাদের দেশকে অপমান করা হবে।” তাঁর এই মন্তব্য যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে হামাসকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। শান্তি প্রস্তাব গ্রহণ না করলে মারাত্মক ফল ভুগতে হবে বলে জানিয়েছেন।