ওয়াশিংটন: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে আসীন রয়েছেন। এবার গোটা পৃথিবীকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা শোনা গেল ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখে। ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও বাণী শোনালেন না, ট্রাম্পের দাবি, এই মুহূর্তে তিনিই গোটা বিশ্বকে চালাচ্ছেন। প্রথম দফায় যখন আমেরিকায় সরকার গড়েছিলেন, তার সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা বলেও মন্তব্য করলেন। (Donald Trump)
The Atlantic পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই দাবি করেছেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় দফায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১০০ দিন পূর্ণ করতে চলেছেন তিনি। সেই উপলক্ষে বিশেষ প্রচ্ছদ বেরিয়েছে পত্রিকার। আর সেখানেই বড় দাবি করেছেন ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, ‘প্রথম দফায় আমার দু’টো কাজ ছিল, দেশ চালানো এবং টিকে থাকা। কারণ দুষ্টু লোকেরা ছিল। দ্বিতীয় দফায় আমি দেশও চালাচ্ছি, বিশ্বকেও চালাচ্ছি। নিজের কাজের কথা ভেবে খুব আনন্দ হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছি আমি’। (US President Donald Trump)
পৃথিবীর একাধিক দেশ যখন যুদ্ধে লিপ্ত, সংঘাত পরিস্থিতি যখন মাথাচাড়া দিচ্ছে একাধিক দেশের মধ্যে, শুল্কযুদ্ধের জেরে বিশ্ব অর্থনীতিতে যখন ঘোর সঙ্কট দেখা দিয়েছে, সেই আবহে ট্রাম্পের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ এই সবকিছুর নেপথ্যেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে আমেরিকার। আগামী দিনে আর কী পদক্ষেপ করেন ট্রাম্প, সেদিকে তাকিয়ে সকলেই।
যে পত্রিকাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ট্রাম্প, তারাই সম্প্রতি তাঁর সরকারের বড় বিপর্যয় ফাঁস করে দেয়। যে সাংবাদিকের সামনে ট্রাম্পের প্রতিরক্ষা সচিব ইয়েমেনে যুদ্ধের পরিকল্পনা ফাঁস করে দেন বলে অভিযোগ, তিনি The Atlantic-এরই প্রধান সম্পাদক জেফ্রি গোল্ডবার্গ। তাই তাদেরকেই ফের সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হলেন কী করে ট্রাম্প, সেই নিয়ে জল্পনা বিচার বিশ্লেষণ চলছে এই মুহূর্তে। ওই সাক্ষাৎকার দেওয়ার আগে গত সপ্তাহে ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়, ‘কৌতূহলের বশবর্তী হয়ে এই সাক্ষাৎকার দিচ্ছি। এখন নিজের সঙ্গেই নিজের প্রতিযোগিতা আমার। দেখতে চাই The Atlantic সত্য বলে কি না’।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানিয়েছেন, প্রথম বারের তুলনায়, দ্বিতীয় বার নিজেকে বেশি শক্তিশালী মনে হচ্ছে তাঁর। তাঁর সরকারে এবার সমস্ত বিশ্বস্ত লোকজন রয়েছেন। বেআইনি অভিবাসী তাড়ানো নিয়ে সম্প্রতি বিচারবিভাগের সঙ্গে সংঘাত বাধে ট্রাম্পের। কিন্তু বিচারবিভাগের সঙ্গেও যে সংঘাতে যেতে প্রস্তুত তিনি, তা নিজের মন্তব্যে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রীয় বিচারপতি জেমস বোসবার্গকে তিনি ‘ভয়ঙ্কর’ বলে উল্লেখ করেন।
গত কয়েক মাসে ট্রাম্প সরকারের একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। দলে দলে মানুষজন রাস্তায় নেমে এসেছেন। এমনকি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি-সহ দেশের তাবড় ঐতিহ্যশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গেও সংঘাতে জড়িয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের প্রতি মানুষের সমর্থন ৩৯ শতাংশে নেমে এসেছে বলে ধরা পড়েছে সাম্প্রতিক সমীক্ষায়। যদিও ট্রাম্প সরকার নিজেদের অবস্থানে অনড়।