উত্তরপ্রদেশ: নদীতে ভেস আসছে ডজন ডজন মৃতদেহ। শুনতে অবাক লাগলেও এমনই দৃশ্যর সাক্ষী হল উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর জেলা। রবিবার যমুনা নদীতে প্রায় ডজনখানেক লাশ ভেসে আসতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। করোনায় মৃত বেশ গ্রামবাসীদের দেহও ভেসে আসতে দেখেন তাঁরা। ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা ছড়ায়।
গ্রামবাসীদের অনেকেরই অভিযোগ, এলাকায় করোনায় মৃতের সংখ্যা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার কারণে শ্মশানে চাপ পড়ছে। এই কারণেই মৃতদেহগুলি নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে স্থানীয়দের অনেকেই আবার জানিয়েছেন, করোনায় কার্যত মড়ক লেগেছে যমুনা নদীর আশেপাশের গ্রামগুলিতে। সেখানে অনেক পরিবারেরই সৎকারের সামর্থ্য নেই। তাই পরিজনদের মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, সরকারি বা বেসরকারিভাবে করোনায় মৃতের সংখ্যার কোনও তথ্যই মেলেনি এই এলাকাগুলোয়।
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দাবি করেছেন রাজ্যে ভয়াবহতা নেই। অক্সিজেন, বেডও পর্যাপ্ত। এমনকি রোগী মৃত্যুর হারও সামান্য। তবে যোগীর আশ্বাসের পরও এই ছবি কার্যত শিউরে ওঠার মতোই। উল্লেখ্য উত্তরপ্রদেশে লাগামছাড়া করোনা সংক্রমণ বাগে আনতে ইতিমধ্যেই লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। জানানো হয়েছে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত চলবে এই লকডাউন।
এদিন ঘটনা চোখে পড়তেই খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। এরপর পুলিশ এসে নদীর তীর থেকে দুটি দেহ উদ্ধার করে। নিয়ে গিয়ে সৎকার করে তারা। ওই দুটি দেহের মধ্যে একটি আধপোড়া দেহ ছিল বলে জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রে। তবে এই ঘটনায় স্বাস্থ্যবিধি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। যদিও গ্রামগুলোতে করোনায় মৃত্যুর প্রকোপ বৃদ্ধির বিষয়টি অস্বীকার করেছে স্থানীয় প্রশাসন। হারিমপুরের এএসপি অনুপ কুমার জানিয়েছেন, 'মৃত্যুর পর সেই দেহ জলে ভাসিয়ে দেওয়ার প্রথা যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে এই অঞ্চলে। যদিও এর আগে বড় জোর ২, ১টি দেহ চোখে পড়ত। হঠাৎ এত দেহ কোথা থেকে এল তাও খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন হারিমপুরের এএসপি অনুপ কুমার।