মুম্বই: মানব পাচারের অভিযোগে ফ্রান্সে আটক হওয়া বিমান দেশে ফিরল (Human Trafficking)। চারদিন ধরে ফ্রান্সের বিমানবন্দরে আটকে থাকার পর, মঙ্গলবার সকালে মুম্বই বিমানবন্দরে নামে এয়ারবাস A340 বিমানটি। মোট ৩০৩ জন ভারতীয়-সহ বিমানটি আটক হয়েছিল ফ্রান্সে। এদিন দেশে ফিরেছেন ২৭৬ জন যাত্রী। পাঁচ শিশু-সহ বাকি ২৭ জন ফ্রান্সেই রয়ে গিয়েছেন। সেদেশে আশ্রয় চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। (Dunki Flight)
এদিন ভোররাত ২.৩০টের সময় ফ্রান্সের ভাটরি বিমানবন্দর থেকে রওনা দেয় এয়ারবাস A340 বিমানটি। ভোর ৪টের কিছু ক্ষণ পর মুম্বই বিমানবন্দরে পৌঁছয়। কাগজপত্র সংক্রান্ত কাজ সেরে মুম্বই বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় যাত্রীদের অনেককে। যাঁরা ফ্রান্সে রয়ে আশ্রয় চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন এবং সেখানে রয়ে গিয়েছেন, তাঁদের প্যারিসে 'স্পেশ্যাল জোনে' স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাঁদের আবেদন বিবেচনা করে দেখা হবে।
দুবাই থেকে নিকারাগুয়ার উদ্দেশে রওনা দেওয়া ওই বিমানটিকে বৃহস্পতিবার ৩০৩ জন যাত্রীসমেত ফ্রান্সের ভাটরি বিমানবন্দরে আটক করা হয়। ফরাসি কর্তৃপক্ষ ভারতীয় দূতাবাসকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেন। কনস্যুলার অ্যাকসেস মেলার পর দূতাবাসের একটি দল পৌঁছেছে ঘটনাস্থলে। জানা যায়, রোমানিয়ার চার্টার কোম্পানি লেজেন্ট এয়ারলাইন্সের বিমানের বিমান সেটি। প্রযুক্তিগত কারণ দেখিয়ে বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের ভাটরি বিমানবন্দরে নামে বিমানটি। জ্বালানি ভরার কথা জানায়। মানব পাচার হচ্ছে বলে সন্দেহ জাগলে সেটিকে আটকানো হয়।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিমানটিকে আটক করেন ফরাসিকর্তৃপক্ষ। মানব পাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্তে নামে সংগঠিত অপরাধ দমন সংস্থা JUNALCO. তদন্তে নেমেছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু'জনকে আটক করো হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বেআইনি ভাবে ওই ৩০০-র বেশি ভারতীয় আমেরিকা এবং কানাডায় ঢোকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন বলে জানা যায়। যদিও রোমানিয়ার ওই বিমান সংস্থা অভিযোগ অস্বীকার করে। মানব পাচারের অভিযোগ প্রমাণ করা গেলে, ২০ বছরের জন্য় ফ্রান্সে ওই বিমান সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপতে পারে।
এ নিয়ে ফ্রান্সে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে সোমবার বিবৃতি দেওয়া হয়। ফ্রান্স সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্রুত যাত্রীদের দেশে ফিরিয়ে আনা কথা জানায় তারা। কিন্তু দুবাই থেকে নিকারাগুয়া কেন যাচ্ছিল বিমানটি? ফরাসি তদন্তকারীদের দাবি, নিকারাগুয়ায় সকলকে নামিয়ে সেখান থেকে আমেরিকা এবং কানাডায় অনুপ্রবেশের কথা ছিল। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই বেআইনি ভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করেছেন ৯৬ হাজার ৯১৭ জন ভারতীয়। এক্ষেত্রে নিকারাগুয়াকে প্রবেশপথ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই।