পশ্চিম বর্ধমান: চারদিনের মাথাতেও শুরু হয়নি দুর্গাপুর ব্যারাজের ভাঙা লকগেটের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতির কাজ। পুর এলাকায় ক্রমশ বাড়ছে জলের সঙ্কট।
এদিকে, ব্যারাজে বিপত্তির জেরে জল সঙ্কটে মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বন্ধ ২টি ইউনিট। এই দুই ইউনিট থেকে ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। পাশাপাশি, ডিপিএলে ২৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ।

এদিকে, বালির বস্তা ফেলে জল আটকানোর প্রক্রিয়া চললেও, সব জল বের করা যায়নি। তাই এখনও শুরু করা যায়নি ৩১ নম্বর লকগেটের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের মেরামতির কাজ। জলের চাহিদা মেটাতে আশপাশের খনি এলাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে জলের ট্যাঙ্কার আনা হয়েছে। পাশাপাশি, চলছে জলের পাউচ বিলি।

শনিবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আচমকা ভেঙে যায় পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর ব্যারাজের ৩১ নম্বর লকগেট। সোমবার দুপুরেও ভাঙা অংশে ৭-৮ ফুট জল জমে ছিল। ফলে এখনও পুরোদমে মেরামতি শুরু করতে পারছে না সেচ দফতর।


তবে, ক্রেনের সাহায্যে ভাঙা লকগেটটিকে ওপরে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, লকগেটটিকে ওপরে তুলে, তারপর ওয়েলডিং করে ভাঙা অংশের মেরামতি করা হবে।


প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ব্যারেজ বিপর্যয়ের পরই বন্ধ করে দেওয়া হয় মাইথন এবং পাঞ্চেত্‍ জলাধার। কিন্তু, দামোদরের শাখানদী, বিভিন্ন ক্যানেল, নিকাশি নালা থেকে জল এসে পড়ছে ব্যারাজে।


ফলে, এখনও ৩১ নম্বর লকগেটের সামনে জল থৈ-থৈ। বালির বস্তা, ক্রেনের সাহায্যে মাটি ফেলে জলের গতিমুখ অন্যত্র ঘোরানোর চেষ্টা করছেন সেচ দফতরের কর্মীরা। পাম্প দিয়েও চলছে জল তোলার কাজ।


প্রশাসন সূত্রে দাবি, আগামীকাল পরিস্থিতি কিছুটা হলেও স্বাভাবিক করা যাবে। সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র সঞ্জয় সিংহ বলেন, মেরামতি কাল অবধি চলবে। কালকের মধ্যে স্বাভাবিক হতে পারে।


দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি বলেন, জল এসেই যাচ্ছে। আটকাতে সময় লাগায় দেরি হচ্ছে। জল বন্ধ হলে আর ১২-১৪ ঘণ্টা লাগবে মেরামতির জন্য। পরশু থেকে স্বাভাবিক।

এরইমধ্যে, সোমবার দুর্গাপুর ব্যারাজের ভাঙা অংশের কাছে পৌঁছয় বিজেপির প্রতিনিধি দল। তাঁদের ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। বিজেপির অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে কথা বলা তো দূরস্ত, দেখাই করতে চাননি সেচ দফতরের কোনও আধিকারিক।


রাজ্য বিজেপি সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের সঙ্গে কেউ কথা বলল না। পানাগড় সেনা ছাউনি পাশেই। ওদের হেল্প নিতে পারত। কেন নিলনা? হেল্প চায়নি।


এরইমধ্যে তৃণমূলের তরফে বিজেপির প্রতিনিধি দলের কাছে ফুলের তোড়া পাঠানো হয়। তা প্রত্যাখ্যান করে বিজেপি। এপ্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা তথা দুর্গাপুর পুরসভার ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওরা রাজনীতি করতে এসেছে। কেন্দ্র তো এমনিতেই কোনও সহযোগিতা করে না।


সেচ দফতর জানিয়েছে, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে চলছে কাজ। লকগেট দ্রুত মেরামতিতে রাজ্য সরকার সবরকম পদক্ষেপ করছে বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর।