নয়াদিল্লি: কার্যতই নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে বায়ুদূষণ। গ্রীষ্ম এবং বর্ষায় অন্তত তা থেকে ছাড় মেলে কিছুটা। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে ধুলোর ঝড়ে কার্যতই ঢেকে গেল রাজধানী (Dust Storm in Delhi)। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে দাঁড়ায় যে, দৃশ্যমানতা কমে দাঁড়ায় ১ হাজার মিটারে। ফলস্বরূপ একধাক্কায় দিল্লির বাতাসের গুণমানও নেমে যায়। বেলা বাড়লে পরিস্থিতির যদিও বা কিছুটা উন্নতি হয়, ধুলোঝড়ের হাত থেকে দিল্লিবাসীর রেহাই নেই (Delhi Air Quality)।


আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কমপক্ষে আরও ৪৮ ঘণ্টা, অর্থাৎ ১৮ মে পর্যন্ত এই ধুলোঝড় চলবে। দিল্লির পার্শ্ববর্তী হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থানেও একই পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। মধ্যপ্রদেশ এবং বিদর্ভকে ঘিরেও রয়েছে পূর্বাভাস। কিন্তু আচমকা এমন ধুলোঝড়ের কারণ কী, কোথা থেকে উৎপত্তি তার, উঠছে একাধিক প্রশ্ন। 


এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, উত্তর-পশ্চিম ভারতের কিছু জায়গায় বাতাসের দিক পরিবর্তন হয়। দিল্লির সমতল এলাকার থেকে তার উচ্চতা ছিল ৯০০ মিটার। ঝড়ের সঙ্গে ধুলো মিশে গিয়ে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে পূর্বের দিকে ছুটে আসে। আবহাওয়া দফতরের অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী সোমা সেনরায় জানিয়েছেন, বাতাসে জলীয় বাষ্প নেই, ফলে বৃষ্টিরও দেখা নেই। তা থেকেই এমন পরিস্থিতি। পাকিস্তান, মধ্যপ্রদেশ হয়ে এগিয়ে আসে।


আরও পড়ুন: Assam Police: ভুঁড়ি থাকলে চাকরিতে নয়, নিতে হবে VRS, পুলিশ বাহিনীকে চাঙ্গা রাখতে সিদ্ধান্ত অসম সরকারের


আবহবিদরা জানিয়েছেন, ঠান্ডা এবং উষ্ণ বাতাস পরস্পরের সংস্পর্শে এলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। ঠান্ডা বাতাস, উষ্ণ বাতাসকে ঠেলে তার জায়গা অধিকার করে। ফলে উষ্ণ বাতাস উপরে উঠে যায়। ফলে সেখানে উচ্চচাপ তৈরি হয়। তার ফলেই এমন অ্যান্টিসাইক্লোনিক ট্রাফের উৎপত্তি ঘটে। বিগত কয়েক দিন ধরে উত্তর-পশ্চিম ভারতে যে তাপপ্রবাহ চলেছে, তার ফলেই ধুলোর পরিমাণ বেড়েছে এবং তা থেকেই ধুলোঝড়ের দাপট দেখা গেল বলে মত আবহবিদদের। 


এ দিন সকালে দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে, সকাল ৯টায় দৃশ্যমানতা ছিল ১১০০ মিটার। এর ফলে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার মাত্রাও একধাক্কায় বেড়ে গিয়েছে। ভোর ৪টেয় প্রতি কিউবিক মিটারে যেখানে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ ছিল ১৪০ মাইক্রোগ্রাম, সকাল ৮টায় তা বেড়ে হয় ৭৭৫ মাইক্রোগ্রাম।  বাতাসের সূক্ষ্ম ধূলিকণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানব শরীরের শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এ দিন দিল্লিতে তাপমাত্রাও ছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি থেকে রেহাই নেই বলে মত আবহবিদদের।