গুয়াহাটি: পুলিশের চাকরির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে শারীরিক সক্রিয়তা। অথচ মাঠে-ময়দানে ঠিক তার উল্টো পরিস্থিতি। কয়েক বছর চাকরিতে এসেই ভুঁড়ি বাগিয়ে ফেলেন কেউ কেউ। দৌড়ঝাঁপ করা তো দূর, নড়তেও পারেন না। এমন পরিস্থিতিতে নড়েচড়ে বসল অসম সরকার (Assam Police)। রাজ্যের পুলিশ কর্মীদের বডি মাস ইনডেক্স-এর (BMI) রেকর্ড রাখার সিদ্ধান্ত নিল তারা। অর্থাৎ বয়স এবং উচ্চতার নিরিখে পুলিশকর্মীদের ওজনের রেকর্ড রাখা হবে। পুলিশকর্মীরা রোগা হচ্ছেন, নাকি মোটা, হিসেব থাকবে তাতে (Assam News)।
IPS অফিসারদেরও এর আওতায় আনা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে রীতিমতো পেশাদার পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। শুধু পুলিশকর্মীই নন, IPS অফিসারদেরও এর আওতায় আনা হচ্ছে। জবুথবু হয়ে পড়া পুলিশবাহিনীকে চাঙ্গা করতেই এমন সিদ্ধান্ত। বলা হয়েছে, যদি দেখা যায় কোনও পুলিশকর্মী বা IPS অফিসারের স্থূলতায় ভুগছেন, ফিট হতে তিন মাস সময় দেওয়া হবে তাঁকে। ওই তিন মাস পর ফের BMI রেকর্ড সংগ্রহ করা হবে। যাঁদের ওজন অত্যধিক বেশি, বাড়তি তিন মাস সময় পাবেন তাঁরা। তার পরও যদি হেরফের না হয়, স্বেচ্ছাবসর নিতে হবে।
অসমের ডিজিপি জিপি সিংহ মঙ্গলবার ট্যুইট করে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, 'অসম পুলিশের সব কর্মী এবং IPS অফিসারদে ১৫ অগাস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়ার কথা ভাবছি আমরা। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে BMI রেকর্ড নথিভুক্ত করা হবে'। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নির্দেশেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি। লেখেন, অসমের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য পুলিশের সদর দফতর BMI রেকর্ড রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাঁদের BMI ৩০-এর ঊর্ধ্বে, স্থূলতার আওতায় পড়েন, নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত তাঁদের বাড়তি তিন মাস দেওয়া হেব ওজন ঝরানোর জন্য। তার পর স্বেচ্ছাবসরের প্রস্তাব দেওয়া হবে। থাইরয়েড বা অন্য কোনও স্বাস্থ্যজনিত গুরুতর সমস্যা থাকলে, সে ক্ষেত্রে ছাড় মিলবে'।
স্থূলতার নিরিখে ইতিমধ্যেই ৬৮০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান অসনের ডিজিপি। সব পর্যায় পেরিয়েও যদি ওজন ঝরাতে ব্যর্থ হন কেউ, আবার স্বেচ্ছাবসর নিতেও নারাজ হন, সে ক্ষেত্রে ফিল্ড ডিউটি-তে তাঁদের রাখা হবে না বলে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্য পুলিশবাহিনী থেকে জবুথবু হয়ে পড়া লোকজনকে বাদ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত। অতিকায় শরীর হয়ে গিয়েছে যাঁদের, স্থূলতার সমস্যায় ভুগছেন, আবার মদ্যপানও করেন, এঁদের চিহ্নিত করতে নির্দেশ দেন। দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, এমন পুলিশকর্মীদেরও সরানোর পক্ষে সওয়াল করেন।
স্বেচ্ছাবসর নেওয়া ব্যক্তিও আগের মতো পুরো বেতন পাবেন!
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র বিভাগের দায়িত্বও সামলান হিমন্ত। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "স্বেচ্ছাবসরের বিধানও রয়েছে সরকারের। বহু পুরনো বিধান। এখনও পর্যন্ত তা কার্যকর করতে হয়নি। এ বার সক্রিয় হচ্ছি আমরা।" স্বেচ্ছাবসর নেওয়া ব্যক্তিও আগের মতো পুরো বেতন পাবেন এবং তাঁদের শূন্যস্থান পূরণে নয়া নিয়োগ করা হবে বলেও জানান হিমন্ত।