নয়া দিল্লি: দেশের ভূমিকম্প মানচিত্রে বড় বদল। ভারত এখন একটি নতুন ভূমিকম্প মানচিত্র প্রকাশ করেছে ভারতীয় মানদণ্ড ব্যুরো (BIS)-র নয়া Earthquake Design Code বলছে, পুরো হিমালয়কেই এবার রাখা হচ্ছে সর্বোচ্চ ঝুঁকির Zone VI–এ, যা এই প্রথম। এর অর্থ হল যে কোনও সময় একটি বড় ভূমিকম্প হতে পারে।

Continues below advertisement

দেশের ৬১ শতাংশ এলাকা এখন মাঝারি থেকে সর্বোচ্চ ঝুঁকির আওতায়। এর পুরো নাম 'সিসমিক জোনেশন ম্যাপ', যা ভূমিকম্পের ঝুঁকি অনুসারে দেশকে ভাগ করে। পুরনো মানচিত্রটি ২০০২ সালে এবং ২০১৬ সালে কিছুটা আপডেট করা হয়েছিল, তবে এই নতুন মানচিত্রটি আরও নির্ভুল করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হল দেশের শহরগুলিকে ভূমিকম্প থেকে রক্ষা করা, যাতে ভূমিকম্পে নির্মাণ প্রকল্পগুলি ধসে না পড়ে এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষতি কম হয়। BIS জানিয়েছে যে এখন থেকে, সমস্ত ইঞ্জিনিয়ারকে এই নতুন মানচিত্র ব্যবহার করতে হবে।

নতুন মানচিত্রটি পুরাতন মানচিত্র থেকে কতটা আলাদা?উত্তর: ভারত মূলত চারটি প্রধান অঞ্চলে বিভক্ত ছিল...

Continues below advertisement

জোন II - কম ঝুঁকিপূর্ণজোন III - মাঝারি বিপদজোন IV- উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণঅঞ্চল V - সর্বোচ্চ ঝুঁকি

জোন I-এর একটি জোনও ছিল, কিন্তু এটি জোন II-এর সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে। নতুন মানচিত্রে একই চারটি জোন বজায় রাখা হয়েছে, তবে জোন V, সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল, আরও কঠোরভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এটিকে অতি-উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বা জোন VI হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে, কারণ এর ঝুঁকি আরও বেশি বলে মনে করা হয়। 

হিমালয়ের নীচে থাকা তিন বড় ফল্ট—মেইন ফ্রন্টাল থ্রাস্টমেইন বাউন্ডারি থ্রাস্টমেইন সেন্ট্রাল থ্রাস্ট

ভূবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, হিমালয়ের নিচে থাকা ভারতীয় পাতকে সমানে ধাক্কা দিয়ে চলেছে ইউরেশীয় পাত। যার জেরে প্রতি বছর তার সরণ হচ্ছে ৫ সেন্টিমিটার করে। এই মানচিত্রে এখন ফল্ট লাইন, মাত্রা এবং মাটির ধরণ বিবেচনা করা হয়েছে, তাই হিমালয়ের চারপাশের সমভূমি, যেমন দেরাদুন এবং হরিদ্বার, আরও সতর্ক করা হচ্ছে। এতে ক্রমশ দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে বেড়ে চলেছে হিমালয়। তার পাদদেশে দেখা দিচ্ছে একাধিক ফাটল। চাপ সামলাতে সামলাতে মাটির উপরিতল কখনও কখনও কুঁকড়ে যাচ্ছে, কখনও চাপমুক্তির জন্য নিজেকে প্রশস্ত করছে। তখনই কম্পন টের পাওয়া যাচ্ছে।

হিমালয় ফ্রন্টাল থ্রাস্ট ধরে সম্ভাব্য ভূকম্পনের বিস্তার দক্ষিণে নেমে গিয়ে পৌঁছতে পারে দিল্লির মতো এলাকায়। তাই দেরাদুন-সহ আউটার হিমালয়ের বড় অংশও উচ্চ ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, উত্তর প্রদেশের কিছু জেলা,  এ সব অঞ্চলে বড় ভূমিকম্প এলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অকল্পনীয় হতে পারে।