নয়াদিল্লি: তেলঙ্গানায় মহিলা পশু চিকিত্সক গণধর্ষণ, হত্যা, দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত চারজনের এনকাউন্টারে মৃত্যুর তদন্তে অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ভিএস সিরপুরকরের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির কমিশন তৈরি হল। তার বাকি সদস্যরা হলেন বম্বে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক রেখা বালদোতা ও প্রাক্তন সিবিআই ডিরেক্টর কার্তিকেয়ন। ৬ মাসে রিপোর্ট পেশ করতে হবে কমিশনকে। চারজনের গুলিযুদ্ধে মৃত্যুর স্বাধীন তদন্ত চেয়ে পেশ হওয়া দুটি জনস্বার্থ পিটিশনের শুনানিতে গোটা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত বলে অভিমত জানিয়েছে দেশের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। বেঞ্চে আছেন বিচারপতি এস এ নাজির, বিচারপতি সঞ্জীব খন্না।
তেলঙ্গানা সরকারের তরফে শুনানিতে হাজির সিনিয়র অ্যাডভোকেট মুকুল রোহাতগিকে তিনি বলেন, যদি বলেন, আপনারা ফৌজদারি আদালতে ওদের (এনকাউন্টারে জড়িত পুলিশকর্মীরা) বিচার করবেন, আমাদের কিছুই বলার নেই। কিন্তু ওদের নির্দোষ বলতে চাইলে মানুষের সত্যটা জানা উচিত। আমরা কিছু ধরে নিতে চাই না। তদন্ত হোক না, তাতে আপনাদের দ্বিধা কেন?
প্রসঙ্গত, তেলঙ্গানা সরকার ওই এনকাউন্টার সমর্থন করে সওয়াল করেছে, অভিযুক্তরা দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে পুলিশ দলের ওপর গুলি চালিয়েছিল।
বেঞ্চ বলেছে, আমাদের সুচিন্তিত অভিমত হল, তেলঙ্গানায় পশুচিকিত্সক ধর্ষণ, খুনে অভিযুক্ত চারজনের সংঘর্ষে মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। রোহাতগি বলেন, আমরা নিরপেক্ষ তদন্তের বিরোধী নই। এনকাউন্টারের তদন্তে ইতিমধ্যে সিট গড়া হয়েছে। তিনি শুনানির সময় আরও বলেন, অভিযু্ক্তরা পুলিশের দিকে পাথর ছোঁড়ে, এমনকী গুলিও চালায়, যদিও সব নিশানায় লাগেনি। কিন্তু হামলায় পুলিশকর্মীরা জখম হন।
প্রসঙ্গত, মহম্মদ আরিফ, জল্লু শিবা, জল্লু নবীন ও চিন্তাকুন্তা চেন্না কেশভুলু-এই চারজন ২৭ ও ২৮ নভেম্বরের মাঝের রাতে হায়দরাবাদের অদূরে শামসাবাদে পশু চিকিত্সককে ধর্ষণ, খুন করে বলে অভিযোগ। ৬ ডিসেম্বর তারা ধরা পড়ে। তবে চাটানপল্লীর যে জায়গায় ২৬ বছরের তরুণী ডাক্তারকে যৌন নির্যাতন করে পোড়ানো হয়েছিলি, সেখানেই পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে তারা নিহত হয়। তাদের তদন্তের অঙ্গ হিসাবে ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য অপরাধস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
চারজনের এনকাউন্টারে মৃত্যুতে উচ্ছ্বসিত নানা মহল এতে ন্যয়বিচার হয়েছে বলে দাবি করে পুলিশের অকুন্ঠ প্রশংসা করেন বহু মানুষ। যদিও আইন হাতে তুলে নিয়ে অতিসক্রিয় হয়ে ওঠা কতটা সঠিক, প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মীরা।