ওয়াশিংটন ডিসি : গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল বিক্ষোভের জের। আগামী দুই বছরের জন্য আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সাসপেন্ডের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানাল ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। তবে যদি "জনগণের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি কমে" তাহলে তাঁকে পুরানো জায়গা ফিরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে কোম্পানির ওয়েবসাইটে ব্লগ পোস্ট করে জানানো হয়েছে।


ব্লগ পোস্ট করা বলা হয়েছে, বড়মাপের হিংসা বা অশান্তির সময় পাবলিক ফিগারদের(পরিচিত মুখ) আচরণের বিষয়টি রয়েছে ফেসবুকের নতুন নীতিতে। নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের সময় ধরে সাসপেনসনের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। প্রথমে এক মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হবে। প্রতিটি সময়কালের শেষে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে।


ট্রাম্পের সাসপেনসনের বিষয়টিও গত মে মাসে ফেসবুক ওভারসাইট বোর্ডের সুপারিশমতো ঘোষণা করা হয়েছে। বিতর্কিত মুখদের আগামীদিনে কীভাবে হ্যান্ডেল করা হবে এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে-এই ঘোষণায় তার ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। 


এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কি ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালুর অনুমতি দেবে ? এপ্রশ্নের উত্তরে ফেসবুক-পোষিত ওভারসাইট বোর্ড বলেছে, সেই মুহূর্তে ট্রাম্পকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল এই কোম্পানির। কিন্তু, এই প্ল্যাটফর্ম থেকে তাঁকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সরিয়ে রাখা নিয়ে স্পষ্ট যুক্তির অভাব ছিল। কিন্তু, শুক্রবার কোম্পানির তরফে ঘোষণা করে ট্রাম্পের 'শাস্তি'র বিষয়টি স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। 


ফেসবুকের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স সংক্রান্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ বলেন, আমরা জানি যে, যে কোনও শাস্তিই আমরা দিই বা না দিই-সেটাই বিতর্কিত হয়ে উঠবে। এমন অনেকে রয়েছেন যাঁরা বিশ্বাস করেন, ফেসবুকের মতো বেসরকারি সংস্থার পক্ষে একজন প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে এভাবে সাসপেন্ড করা ঠিক হয়নি। আবার অনেকে বিশ্বাস করেন, ট্রাম্পকে এখনই সারা জীবনের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা উচিত। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিরোধীদের থেকে আজকের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হবে তাও জানি। কিন্তু আমাদের কাজ, যতটা সম্ভব স্বচ্ছ ও সুন্দরভাবে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো। ওভারসাইট বোর্ডের নির্দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তা করা।


প্রসঙ্গত, গত ৬ জুন ট্রাম্পকে সাসপেন্ড করে ফেসবুক। কোম্পানি মনে করেছিল, ক্যাপিটল বিক্ষোভে প্ররোচনা জুগিয়েছে ট্রাম্পের পোস্ট। এই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল কি না জানার জন্য ওভারসাইট বোর্ডের কাছে বিষয়টি পাঠানো হয়। ট্রাম্পকে বরাবরের মতো নিষেধ ঘোষণা করা হবে নাকি তাঁর অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেওয়া হবে-তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ওভারসাইট বোর্ড জানিয়ে দেয়, সেই সময় ফেসবুকের তরফে ট্রাম্পকে সাসপেন্ডের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। কিন্তু, অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করার মতো যুক্তি দেওয়া হয়নি ফেসবুকের তরফে। এও বলা হয় যে, অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেনসন ফেসবুকের নীতির অংশ নয়। তাই যুক্তি স্পষ্ট ও স্বচ্ছ হতে হবে বলে বোর্ডের তরফে বলা হয়।