নয়াদিল্লি: ফেসবুক ছাড়লেন ভারতে সংস্থার পাবলিক পলিসি প্রধান আঁখি দাস। ভারতে বিরাট জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ঘৃণা বিদ্বেষ ছড়ানো কনটেন্ট ব্লক করা অর্থাত্ আটকানোর ক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ছিল। বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন তিনি। তার জেরে শেষ পর্যন্ত ইস্তফা দিলেন আঁখি।
যদিও ফেসবুকের তরফে ই মেলে সংবাদ সংস্থাকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জনসেবার প্রতি আগ্রহ আছে আঁখির। সে ব্যাপারেই নিজেকে নিয়োজিত করতে ফেসবুকের দায়িত্ব পালনে অব্যাহতি নিয়েছেন তিনি। ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভারতে সবচেয়ে পুরানো কর্মীদের অন্যতম ছিলেন তিনি। গত ৯ বছর ধরে কোম্পানির সম্প্রসারণ ও তার পরিষেবা ছড়িয়ে দেওয়ায় বিরাট ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। বিরাট অবদান রেখেছেন তিনি। তাঁর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ, তাঁর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা রইল। বিবৃতিটি প্রকাশ করেছেন ফেসবুকের ইন্ডিয়া ডিরেক্টর অজিত মোহন।
ফেসবুকের মতো জনপ্রিয় গণমাধ্যমে ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য মোকাবিলায় আঁখির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। শুধু তিনি নন, সামগ্রিকভাবে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছিল ফেসবুককে নিয়েও। কীভাবে ফেসবুকে রাজনীতি সংক্রান্ত কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ করা হয়, সে ব্য়াপারে সংস্থার ভিতর থেকে কর্মীরা যেমন প্রশ্ন তুলছিলেন, তেমনই তুলছিল ভারত সরকারও।
গত আগস্টেই দি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও টাইম ম্য়াগাজিন সহ বিদেশি মিডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধে অভিযোগ তোলা হয়, ফেসবুক ও তাদের মেসেজ সার্ভিস দেওয়া অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ বিজেপির লোকজনের পোস্ট করা কনটেন্টের ক্ষেত্রে ঘৃণাবিদ্বেষ ছড়ানো ভাষণ সংক্রান্ত বিধিনিয়ম প্রয়োগ করেনি। আরও দাবি করা হয়, সংস্থার এক এক্সিকিউটিভ, পরে যাঁকে শ্রীমতী দাস বলে চিহ্নিত করা হয়, কোম্পানিকে বুঝিয়েছিলেন, বিজেপির লোকজনের পোস্ট করা কনটেন্টের ক্ষেত্রে নিয়মভঙ্গ হলে যদি ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তবে ফেসবুকের ভারতে ব্যবসায়িক স্বার্থ মার খেতে পারে।
বিদেশি মিডিয়ায় প্রকাশিত নিবন্ধের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ভারতে জোর বিতর্ক হয় শাসক বিজেপি ও বিরোধী কংগ্রেসের মধ্যে। রাহুল গাঁধী ও অন্য বিরোধী নেতারা সরকার সোস্যাল মিডিয়াকে চাপে ফেলছে, এটা তার প্রমাণ বলে দাবি করেন।
ফেসবুকের তরফে যদিও সাফাই দেওয়া হয়, তারা হিংসা ছড়াতে পারে, এমন কোনও কনটেন্ট বা ঘৃণাভরা ভাষণই অনুমোদন করে না। আমরা যে কোনও ব্যক্তির রাজনৈতিক অবস্থান বা আনুগত্য নির্বিশেষে বিশ্বের সর্বত্র এই নীতি মেনেই চলি।