বীরভূম: তারাপীঠে তারা মায়ের আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে শক্তির আরাধনা।


আশ্বিন মাসের শুক্লা চতুর্দশীর এই তিথিতে প্রতিবছর মন্দির চত্বরে তিল ধারনের জায়গা থাকে না। করোনা আবহে সেই এবার ভিড় অনেকটাই কম।

লোকগাথা অনুযায়ী, আশ্বিনের শুক্লপক্ষের চতুর্দশীতে তারা মায়ের আবির্ভাব৷ কথিত আছে, পাল রাজত্বের সময় স্বপ্নে তারা মায়ের নির্দেশ পেয়ে চতুর্দশীতে শ্মশান থেকে তাঁর মূর্তি এনে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন জয়দত্ত সওদাগর। সেই উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো আজ তারাপীঠে বিশেষ পুজোর আয়োজন৷

শ্বেত শিমুল বৃক্ষের তলায় পঞ্চমুন্ডির আসনের নীচে মায়ের শিলামূর্তি আছে। শুক্লা চতুর্দশীর এই তিথিতেই সেই মূর্তি উদ্ধার করে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন জয় দত্ত।

এদিন সূর্যোদয়ের আগে, ঘুম ভাঙিয়ে ভোর তিনটে নাগাদ মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে মায়ের বিগ্রহ বের করে আনা হয়। বিরাম মঞ্চে তাঁর ছোট বোন মুলুটির মা মৌলিক্ষার মন্দিরে অভিমুখে পশ্চিমদিকে বসানো হয়।

জীবিত কুণ্ডু থেকে জল এনে মাকে স্নান করানোর পর পরানো হয় রাজবেশ। এরপর বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে মঙ্গল আরতি পর্ব!

ভোরের আলো ফুটতেই ধীরে ধীরে মন্দির চত্বরে জমতে শুরু করে ভক্তদের! বছরকার মতো আজকের দিনেই তারা মাকে এক পলক ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পান ভক্তরা! ভক্তরা মাকে স্পর্শ করে পুজো দেন।

দিনভর বিরামমঞ্চে থাকার পর বিকেলে আরতির পর মাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মূলমন্দিরে। স্নানের পর নবরুপে সাজানো হয় দেবীমূর্তিকে।

রীতি অনুযায়ী মায়ের আজ উপোস! এদিন মায়ের মধ্যাহ্ন ভোগ হয় না। দিনভর তাই ফল-মিষ্টিই খান মা। মহাভোগ তোলা থাকে রাতের জন্য!

সকালে মঙ্গলারতির পর লুচি, মিষ্টি, সুজি দিয়ে দেওয়া হয় শীতল ভোগ। রাতে খিচুড়ি, পোলাও, পাঁচরকম ভাজা, মাছ-মাংস দিয়ে করা হয় ভোগ নিবেদন।