নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) আবেদনেও চিড়ে ভিজল না।  ৩ কৃষি আইন (Farm Law) প্রত্যাহারে সংসদের সিলমোহর না পড়া অবধি, আন্দোলন চলবে বলে জানিয়ে দিল সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের তরফে রাকেশ টিকায়েত (Rakesh Tikayet) বলেন, "সরকার বলল আর অবস্থান ছেড়ে উঠে গেলাম, তা হবে না, আগে আলোচনায় বসুক সরকার।" 


শুক্রবার দেশজুড়ে প্রতিবাদের মুখে পড়ে শেষপর্যন্ত ৩টি কৃষি আইন প্রত্যাহার করল কেন্দ্র। গুরু নানকের জন্মদিনে উদ্দেশে ভাষণে এই ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই ঘোষণা করে মোদির আবেদন, কৃষকরা এবার ক্ষেতে ফিরে আসুন। তিনি বলেন, "এই মাসের শেষে সংসদের অধিবেশনে, ৩ কৃষি আইনকে প্রত্যাহার করার সাংবিধানিক প্রক্রিয়া শেষ করব।আপনারা নিজেদের ঘরে ফিরুন, খেতে ফিরে যান।" 


শনিবার দিল্লি-হরিয়ানা সীমানার সিঙ্ঘুতে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার ৯ সদস্যের কোর কমিটির বৈঠক হয়। ঠিক হয়, পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী,সোমবার লখনউয়ে র‍্যালি করবে কৃষক সংগঠনগুলি। ২৯ নভেম্বর সংসদ চলো অভিযান। আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা নির্ধারণে,রবিবার বৈঠকে বসছে ৪২টি কৃষক সংগঠন।


আরও পড়ুন, তিন মাসের জন্য বন্ধ তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস, রেলের ভূমিকায় সরব বিজেপি-তৃণমূল


সিঙ্ঘুতে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার কোর কমিটির এদিনের বৈঠকে মূলতঃ ৪টি বিষয় উঠে আসে। আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন,কৃষি আইন বাতিলের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া কবে শুরু হবে? ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তা কবে মিলবে? আন্দোলনকারী কৃষক নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার নিয়ে কী সিদ্ধান্ত? আন্দোলনে মৃত কৃষক পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের কী হবে? এখনও আন্দোলনে অনড় কৃষক সংগঠনগুলি। এই আবহে চাপ বাড়ছে মোদি সরকারের। 


কৃষকদের দাবিদাওয়ার পক্ষে শনিবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। কংগ্রেস নেত্রী বলেন, "প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, কৃষকদের ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহার করা হোক, মৃত কৃষকদের পরিবার পিছু আর্থিক সাহায্য করা হোক।" তাৎপর্যপূর্ণভাবে কৃষকদের দাবির সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন পিলিভিটের বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধীও। শনিবারই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তিনি বলেছেন,"কঠিন ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করতে গিয়ে প্রায় ৭০০ কৃষক ভাই ও বোন শহিদ হয়েছেন। আমি মনে করি, এই সিদ্ধান্ত যদি আগে নেওয়া হত, তাহলে এই নির্দোষ মানুষগুলোর প্রাণ যেত না। কৃষকদের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তা, মৃত কৃষকদের পরিবার পিছু ১ কোটি টাকা করে সাহায্য এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন তিন।


তাই সার্বিকভাবে কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণার পরেও, এই ইস্যুতে,সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের আগে কেন্দ্রকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে বিরোধীরা। সবমিলিয়ে কৃষি আইন প্রত্যাহার করার পরেও এই ইস্যুতে ক্রমশ চাপ বাড়ছে মোদি সরকারের ওপর।