নয়াদিল্লি: পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে মুঘল ইতিহাসের অংশ (Mughal History)। তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে সর্বত্র। সেই আবহে এ বার মুখ খুললেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্সের সভাপতি ফারুখ আবদুল্লা (Farooq Abdullah)। তাঁর মতে, ইতিহাসকে এ ভাবে মুছে ফেলা যায় না। বইয়ের পাতা থেকে মুঘল ইতিহাস সরালেও, লালকেল্লা-সহ মুঘল স্থাপত্যকে কী ভাবে ঢাকবে নরেন্দ্র মোদি সরকার, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্নে মতামত জানালেন ফারুখ
শনিবার উপত্যকায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন ফারুখ। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করলে নিজের মতামত জানান। এ দিন ফারুখ বলেন, "শাহজাহান, ঔরঙ্গজেব, আকবর, বাবর, হুমায়ুন, জাহাঙ্গিরকে কী ভাবে ভুলবেন ওঁরা? ৮০০ বছরের বেশি সময় শাসন করেছেন ওঁরা। সেই সময় কোনও হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান ঝুঁকি বা বিপদ অনুভব করেননি। তাজমহল দেখাতে গেলে, সেটি কে তৈরি করেছেন বলবেন? দিল্লির আগে মুঘলদের রামুকুট যে ফতেপুর সিক্রিতে ছিল, সেটির নির্মাতা কে ছিলেন? হুমায়ুন সমাধি এবং লালকেল্লা কী ভাবে লুকোবেন ওঁরা?"
ফারুখের মতে, যত ইচ্ছে চেষ্টা করা হোক না কেন, ইতিহাসকে মুছে ফেলা অসম্ভব। তাঁর কথায়, "যে ডালে বসে আছেন, সেই ডালেই কুড়ুলের কোপ মারছেন ওঁরা। আমরা চিরকাল থাকব না। কিন্তু ইতিহাস চিরকাল থাকবে।"
২০২৪-এর লোসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে এ দিন বিজেপি বিরোধী শক্তিকে একজোট হওয়ার বার্তাও দেন ফারুখ। শ্রীনগরের সাংসদ ফারুখ। তিনি জানিয়েছেন, বিজপি বিরোধী জোট নিয়ে আলোচনা চলছে এখনও। জাতীয় স্তরে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া নিয়ে শীঘ্রই সুবর আসছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিজেপি-কে পরাস্ত করতে ঐক্যবদ্ধ ছাড়া উপায় নেই বলেও এ দিন মন্তব্য করেন ফারুখ। তিনি বলেন, "জোট নিয়ে সুখবরের ইঙ্গিত পাচ্ছি আমি। জোট হল একমাত্র উপায়, যা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারে। একক ভাবে লড়াই করা অসম্ভব। তাই জাতীয় স্তরে প্রত্যেক বিরোধী দলই হাত মেলানোর রাস্তা খুঁজছেন, যাতে নির্বাচনে জয়ী হওয়া যায়।"
কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খর্ব হওয়ার সময় গৃহবন্দি হয়েছিলেন ফারুখ
এর আগে, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খর্ব হওয়ার সময় গৃহবন্দি হয়েছিলেন ফারুখ। সময়ে-অসময়ে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু ভারতের অখণ্ডতার পক্ষে এ দিনও সওয়াল করেন ফারুখ। অরুণাচল প্রদেশে চিনা আগ্রাসন নিয়ে এ দিন মুখ খোলেন তিনি। সেখানে বেশ কিছু এলাকার নয়া নামকরণ করেছে চিন। তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে ফারুখ জানান, চিনের কোনও দাবি আগেও ধর্তব্য়ের মধ্যে আনেনি ভারত। আগামী দিনেও তাদের গাজোয়ারিকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।