নয়াদিল্লি: লোকসভায় পাশ করানো হল ২০২৩-এর আর্থিক বিল। ৬৪টি সংশোধনী-সহ পাশ করানো হল এই বিল। এর মধ্যে ডেবট মিউচুয়াল ফান্ডের কিছু ক্যাটাগরির উপর দীর্ঘমেয়াদি কর ছাড়ের বিষয় রয়েছে। এছাড়া জিএসটি অ্য়াপলেট ট্রাইবুনালের বিষয়টিও রয়েছে।


ওই সংশোধনীগুলির মধ্যে রয়েছে স্বল্পমেয়াদি মূলধন লাভ হিসাবে ডেবট মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগে কর দেওয়ার সরকারের পদক্ষেপ


হিন্ডেনবার্গ কাণ্ডের পরে আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে জেপিসি (জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটি) তদন্তের দাবিতে কার্যত হট্টগোল হয়েছিল সংসদে। সেই সময়ে কার্যত আলোচনা ছাড়াই পাশ হয়েছে এই আর্থিক বিল।


এই বিলটি পাস এবং বিবেচনার করানোর সময়, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সরকারি কর্মচারীদের পেনশন সমস্যাগুলি দেখার জন্য অর্থ সচিবের অধীনে একটি কমিটি গঠনেরও ঘোষণা করেছেন। তিনি আরও জানান, ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বিদেশ ভ্রমণের সময় ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে করা লেনদেনও খতিয়ে দেখবে, যাতে কর সংক্রান্ত বিষয়ে নজর থাকে। অর্থমন্ত্রী ৬৪টি সরকারী সংশোধনী পেশ করেন ফিনান্স বিলে যা ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে বাজেট প্রস্তাবের সঙ্গেই পেশ করা হয়েছিল। বিলে নতুন ২০টি নতুন সেকশন ঢোকানো হয়েছে। এখন রাজ্যসভায় যাবে অর্থবিল।


কী এই ফিনান্স বিল ?


কেন্দ্রীয় বাজেটের নথির অংশ হিসেবে ফি বছর সংসদে পেশ হয় অর্থ বিল। বার্ষিক বাজেটে কর প্রস্তাবনায় কোনও পরিবর্তন করতে হলে প্রয়োজন পড়ে এই বিলের। সংবিধানের ১১০ নম্বর ধারা অনুযায়ী, অর্থ বিল শুধুমাত্র সংসদের নিম্নকক্ষ বা লোকসভায় পেশ করা যেতে পারে। এটি রাজ্যসভায় পেশ করা যাবে না বা উভয় কক্ষের যৌথ কমিটিতেও পাঠানো যাবে না। একটি বিল অর্থ বিল হিসাবে তখনই বিবেচিত হয়, যখন এটি শুধুমাত্র কর, সরকারি রাজস্ব, সরকারি ব্যয় এবং সরকারি ঋণের মতো আর্থিক বিষয়গুলির সাথে সম্পর্কিত থাকে।


একবার বিল লোকসভায় পাস হয়ে গেলে, তা সংসদের উচ্চ কক্ষে পাঠানো হয়। যা আবার ১৪ দিনের মধ্যে সুপারিশ ছাড়া বা সুপারিশ-সহ ফিরে আসতে হবে। তবে, লোকসভা রাজ্যসভার এই সুপারিশ গ্রহণ করতে পারে, আবার প্রত্যাখ্যানও করতে পারে। যদি ১৪ দিনের মধ্যে রাজ্যসভা থেকে বিল ফিরে না আসে, তাহলে উভয় কক্ষে তা পাস হয়ে গেছে বলে ধরে নেওয়া হবে।


ফিনান্স বা অর্থ বিলের উদ্দেশ্য কী ?


কেন্দ্রীয় বাজেট ঘোষণার পর পরই নিম্ন কক্ষে পেশ করা হয় ফিনান্স বা অর্থ বিল। সরকার যখন কর মকুব, বিলোপ বা নিয়ন্ত্রণের নিয়ম পরিবর্তন প্রস্তাব করে বা কর পরিবর্তনের প্রস্তাব করে, তখন অর্থ বিল আসন্ন আর্থিক বছরের জন্য এই প্রস্তাবগুলিকে কার্যকর করে। সংশ্লিষ্ট বিলটি বিভিন্ন কর সংক্রান্ত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন করে এবং প্রতিটি উদ্দেশ্যে একটি পৃথক সংশোধনী আইন আনার প্রয়োজনীয়তা দূর করে। 


সংসদের উভয় কক্ষে পাস হয়ে যাওয়ার পর, ফিনান্স বিল আইনে পরিণত হয়। শেষে রাষ্ট্রপতির সম্মতির প্রয়োজন পড়ে। রাষ্ট্রপতি অর্থ বিলকে স্থগিত রাখতে বা তার সম্মতি দিতে পারেন। কিন্তু, হাউসে অর্থ বিল ফেরত দিতে পারবেন না।


আরও পড়ুন: কংগ্রেসে বড় ধাক্কা, আর সাংসদ নন রাহুল গান্ধী !