অমরাবতী: দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। স্কিল ডেভলপমেন্ট দুর্নীতিতে ((N. Chandrababu Naidu)) অভিযুক্ত চন্দ্রবাবু। দীর্ঘ দিন ধরেই টানাপোড়েন চলছিল সেই নিয়ে। শেষ মেশ শনিবার ভোরবেলা তাঁকে গ্রেফতার করল রাজ্য পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (CID). ইতিমধ্যে ডাক্তারি পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে তেলুগু দেশম পার্টির প্রধানের (TDP)। জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। অর্থাৎ থানা থেকে জামিন পাওয়ারও কোনও সম্ভাবনা নেই আপাতত। (Chandrababu Naidu Arrested) চন্দ্রবাবুর ছেলে নারা লোকেশকেও আটক করা হয়েছে।
তেলুগু দেশম পার্টি তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয় যে, শনিবার ভোরে গ্রেফতার করা হয় চন্দ্রবাবুকে। আরকে ফাংশন হলে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন চন্দ্রবাবু। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকরাও। সেই সময় ভোররাত ৩টে নাগাদ পুলিশ কার্যতই তাঁদের ঘেরাও করে বলে অভিযোগ। নান্দিয়াল রেঞ্জের ডিআইজি রঘুরামি রেড্ডির নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী এবং CID-র আধিকারিকরা কার্যতই চন্দ্রবাবু নায়ডুকে তুলে নিয়ে যান বলে অভিযোগ।
যদিও পুলিশের দাবি, চন্দ্রবাবুকে গ্রেফতার করতে গেলে বাধার মুখে পড়তে হয় তাদের। TDP সমর্থকরা পুলিশের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে যান। এমনকি চন্দ্রবাবুর নিরাপত্তায় মোতায়েন SPG বাহিনীও পুলিশ এবং গোয়েন্দাদের ভিতরে ঢুকতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। তাতে ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন চলে। এর পর ৬টা নাগাদ গাড়ির মধ্যে থেকে বের করে এনে চন্দ্রবাবুকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাড়ি থেকে নামানোর পর চন্দ্রবাবুর সঙ্গে কথা বলেন ডিআইজি। অন্ধ্রপ্রদেশ স্কিল ডেভলপমেন্ট দুর্নীতিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে জানান। এক নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে নোটিস ধরানো হয় তাঁকে। এর পর গ্রেফতার করা হয়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই গাড়িতে তোলা হয় তাঁকে। চন্দ্রবাবুকে বিজয়ওয়াড়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
যে নোটিস ধরিয়ে গ্রেফতার করা হয় চন্দ্রবাবুকে, তাতে বলা হয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ (৮), ১৬৬, ১৬৭, ৪১৮, ৪২০, ৪৬৫, ৪৭১, ৪০৯, ২০১, ১০৯ আরডব্লিউ ৩৪ ও ৩৬ ধারা এবং ১৯৮৮ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে গ্রেফতার করা হচ্ছে তাঁকে। নোটিসে স্পষ্ট বলা রয়েছে যে, জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হচ্ছে তাঁকে। একমাত্র আদালত অনুমতি দিলেই জামিন হতে পারে।
২৫০ কোটি টাকার অন্ধ্রপ্রদেশ স্কিল ডেভলপমেন্ট প্রকল্প দুর্নীতি মামলায় এক নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে চন্দ্রবাবুকে। যদিও তাঁর আইনজীবীর দাবি, এফআইআর-এ নাম ছিল না চন্দ্রবাবুর। কী প্রমাণের ভিত্তিতে তাঁকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, কী কী তথ্য হাতে এসেছে, সেই সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি CID-র তরফে। CID-র দাবি, তদন্তের স্বার্থেই চন্দ্রবাবুকে আগে গ্রেফতার করা প্রয়োজন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিম্যান্ড রিপোর্টে বাকি তথ্য তুলে ধরা হবে।
এর আগে, আয়কর দফতরের তরফেও নোটিস ধরানো হয়েছিল চন্দ্রবাবুকে। একটি পরিকাঠামো সংস্থার কাছ থেকে তিনি ১১৮ কোটি টাকা নিয়েছিলেন বলে দাবি করা হয় তাতে। ওই ১১৮ কোটি টাকা চন্দ্রবাবু আয়ের হিসেবে দেখাননি কেন, কেন তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে না, সেই নিয়ে শোকজও ধরানো হয়। যদিও আয়কর নোটিস থেকে গ্রেফতারির সময়কাল নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আগামী বছরের শুরুর দিকেই অন্ধ্রপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে চন্দ্রবাবু এবং বিজেপি-র মধ্যে জোট নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তাই রাজ্যে ক্ষমতাসীন ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং জগনমোহন রেড্ডির সরকার চন্দ্রবাবুর বিরুদ্ধে তৎপর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ TDP নেতৃত্বের। যদিও এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি বিজেপি।