লাহৌর: দেশের গোপন তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে ১০ বছরের সাজা। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ১০ বছরের কারাবাস দিল আদালত।মঙ্গলবার পাকিস্তানের বিশেষ আদালত এই রায় শুনিয়েছে। ইমরানের পাশাপাশি, তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (PTI) ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশিকেও ১০ বছরের সাজা শোনানো হয়েছে। ইমরান যদিও বরাবরই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে দাবি করে আসছেন। কিন্তু পাকিস্তানের গোপন তথ্য তিনি ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। (Imran Khan)
গত বছর অগাস্ট মাসে গ্রেফতার হন ইমরান। তার পর থেকে জেলেই রয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার জেলের ভিতরেই মামলার শুনানি চলছিল। সেখানেই ইমরানকে ১০ বছরের সাজা শোনানো হয়। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। তার আগেই ১০ বছরের কারাবাস হল ইমরানের। PTI-এর তরফে এদিন জানানো হয়, 'প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ মাহমুদ কুরেশিকে ১০ বছরের সাজা শোনানো হয়েছে'। (Imran Khan Gets Jail)
পাকিস্তান সরকারের যে গোপন তথ্য ইমরান ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ, একটি Cipher-কে ঘিরেই সেই অভিযোগ ওঠে। পাকিস্তানে এই মামলা Cipher Case নামেও পরিচিত। Cipher অর্থাৎ সাঙ্কেতিক ভাষায় লেখা কিছু বার্তা। অভিযোগ, আমেরিকা থেকে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতের পাঠানো এমনই একটি বার্তা ইমরান এবং কুরেশির হাতে উঠেছিল, যাতে লেখা ছিল, 'ইমরানকে পাকিস্তানের মসনদ থেকে সরাতে সহযোগীর ভূমিকা পালন করছে আমেরিকা'। কূটনৈতিক সেই বার্তা গোপন রাখেননি ইমরান।
আরও পড়ুন: INS Sumitra: মাছ ধরতে বেরিয়ে অপহৃত, ট্রলার ছিনতাই, জলদস্যুদের হাত থেকে পাক নাবিকদের উদ্ধার করল ভারত
সাঙ্কেতিক ভাষায় লেখা ওই বার্তা পেয়েও ইমরানের সেটি ফাঁস করে দেন বলে অভিযোগ। ইমরান বরাবরই বলে এসেছে, তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরাতে গভীর ষড়যন্ত্র রচনা করা হয়েছিল। সাঙ্কেতিক ভাষায় লেখা ওই বার্তাতেও তেমন ইঙ্গিত ছিল। সেই মতোই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয় পাক সেনেটে। এই মামলায় ইমরান এবং কুরেশির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন ১০ জন। পাকিস্তান ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সিই ইমরানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। বলা হয়, কূটনৈতিক কথোপকথন প্রকাশ্যে এনে দেশের গোপনীয়তা রক্ষার আইন লঙ্ঘন করেছেন ইমরান এবং কুরেশি।
এর আগে, ডিসেম্বর মাসে ইমরান এবং কুরেশির গ্রেফতারি পরবর্তী জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে পাক সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু আরও একাধিক মামলায় জেলবন্দি রয়েছেন ইমরান। কুরেশি ছাড়া পেতে পারেন বলে সম্ভাবনা দেখা দিলেও, তাঁকে নাগালের মধ্যে পেয়ে ধস্তাধস্তি, মারপিট শুরু হয়। তার পর গত ৯ মে নতুন মামলায় ফের গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে পাক সেনেটে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হলে, প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান। ২০২৩ সালের ৫ অগাস্ট থেকে জেলে রয়েছেন তিনি। তোষাখানা মামলায় তিন বছরের জেল হয়েছে তাঁর। সুপ্রিম কোর্টে সেই সাজা বাতিল হলেও, Cipher মামলায় ফের গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। সেই থেকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে ছিলেন।