নয়াদিল্লি: বড়দিনে গোটা বিশ্ব যখন উৎসবমুখর, সেই সময় ফের তেতে উঠল মণিপুরের পরিস্থিতি। বুধবার ফের গোলাগুলি চলল সেখানে। দুই সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে সেখানে। এখনও পর্যন্ত হতাহতের কোনও খবর নেই যদিও। কিন্তু নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ইম্ফল-সহ আশেপাশের এলাকায়। (Manipur Situation)


ইম্ফল ইস্টের সিনাম কোম গ্রামে নতুন করে গোলাগুলি চলেছে বলে খবর। জানা গিয়েছে, কাংপোকপি জেলায় পাহাড়ের উপর থেকে সিনম কোম গ্রামকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সশস্ত্র একটি গোষ্ঠী।  এর পর গ্রামের 'স্বেচ্ছাসেবক'রা তার পাল্টা জবাব দেন। পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান করছিলেন তাঁরা। কী নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। (Manipur Fresh Clash)


তবে বড়দিন এবং বর্ষবরণ ঘিরে সর্বত্র যখন উৎসবের আমেজ, সেই সময় নতুন করে মণিপুর উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ওই এলাকায় বাড়তি পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তবে শুধুমাত্র বুধবার সকালেই নয়, মঙ্গলবার রাতেও একদফা গোলাগুলি চলেছে মণিপুরে।  থামনাপোকপিতে সশস্ত্র একটি দলের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয় নিরাপত্তাবাহিনীর।


এদিন মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। তাঁর দাবি, ২০২৩ সালের ৩ মে হিংসা ছডানোর আগে পর্যন্ত রাজ্য সঠিক পথে এগোচ্ছিল, উন্নয়নের পথে এগোচ্ছিল। জি-২০ বৈঠক থেকে মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতা, ত্রিদেশীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজনও হয় রাজ্যে। বর্তমান পরিস্থিতিতেও সরকারি আধিকারিকরা ভাল কাজ করছেন বলে দাবি করেন তিনি। 


বীরেনের দাবি, মণিপুরের এই পরিস্থিতির নেপথ্যে একাধিক কারণ রয়েছে। রাজ্যে বিভাজনকারী শক্তি মাথাচাড়া দিয়েছে। ক্ষমতার লোভে কিছু মানুষ অশান্তিতে মদত জোগাচ্ছেন বলে অভিযোগ তাঁর। ঘরছাড়াদের ফিরিয়ে আনতে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান বীরেন। পাশাপাশি, রাজ্যে NRC চালুর পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি। ১৯৬১ সালেক ইনার লাইন পারমিট হিসেবে ধরার পক্ষে তিনি।  বাইরে থেকে মণিপুরে প্রবেশ করতে ইনার লাইন পারমিট লাগে। তারই উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 


কিন্তু বীরেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে বলে দাবি করলেও, মণিপুরে অশান্তি থামার কোনও লক্ষণ নেই। কয়েক দিন আগেই নিরাপত্তাবাহিনী পর পর বেশ কিছু গ্রামে তল্লাশি চালায়। সেই তল্লাশিতে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। ১৭ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনা এবং মণিপুর পুলিশের যৌথ অভিযানে IED উদ্ধার হয় ইম্ফল ইস্টের জেলা থেকে।  কুকি বনাম মেইতেই সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ২৫০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন মণিপুরে। হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া। বহু গ্রামে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এতদিনেও কেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গেল না, প্রশ্ন উঠছেই।