কলকাতা: এক দিকে বুদ্ধপূর্ণিমা- ভরা কটাল। অন্যদিকে, পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ-সুপার ব্লাড মুন। তার সঙ্গে যোগ দিল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। বুধবারে পূর্ণ হল ত্র্যহস্পর্শ।
“জন্ম মোদের ত্র্যহস্পর্শে, সকল-অনাসৃষ্টি। ছুটি নিলেন বৃহস্পতি, রইল শনির দৃষ্টি। বুধের সকালে আক্ষরিক অর্থেই ত্র্যহস্পর্শ।“ শনির দৃষ্টি কি না সে বিতর্কে না গেলেও বিপর্যয় ভয়াবহ। প্রকৃতির রুদ্র রোষ শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দেওয়ার মতো। একই দিনে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস, বুদ্ধপূর্ণিমা-ভরা কটাল এবং পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ-সুপার ব্লাড মুন।
গতকাল, বুধবার সকাল সোয়া ন’টা নাগাদ বালেশ্বরে আছড়ে পড়ে ঝড়, তাণ্ডব চালাল প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে। ইয়াসের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড পূর্ব মেদিনীপুর। ঢেউ ছুঁয়ে গেল নারকেল গাছের মাথা। জলের তলায় দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর থেকে হলদিয়া। ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত দুই ২৪ পরগনা সহ রাজ্যের ১৪টি জেলা। বুধবার বুদ্ধপূর্ণিমা এবং বছরের প্রথম পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। যদিও ভারতের আকাশে এই গ্রহণ দেখ যায়নি। ভারতের আকাশে ছিল সুপার ব্লাড মুন বা লাল রঙের চাঁদ।
‘ব্লু মুন’ নীল না হলেও ‘সুপার ব্লাড মুন’ কিন্তু রক্তাভ হয়। জায়গা বিশেষে বদলে যায় চাঁদের রং। কোথাও বেশি লাল, কোথাও কম। একে চন্দ্রগ্রহণ, তার সঙ্গে পূর্ণিমার ভরা কটাল। ফুঁসে উঠেছে জল। আর সেই ফুলে ওঠা জলে ঝাপটা দিয়েছে ইয়াস। ত্র্যহস্পর্শ পূর্ণ করেছে ঘূর্ণিঝড়।
উল্লেখ্য, নির্ধারিত সময়ের আগেই গতকাল ওড়িশার বালেশ্বরের দক্ষিণ দিকে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। সকাল সোয়া ৯টা নাগাদ শুরু হয় ল্যান্ড ফল। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলে ল্যান্ড ফল প্রক্রিয়া। দুপুর ১টা ৯ মিনিটে এই প্রক্রিয়া শেষ হয়।
ইয়াস আছড়ে পড়ার আগে আজ সকাল থেকেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ল্যান্ড ফলের সময় কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার।ঘূর্ণিঝড়ের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। দিঘায় সকাল সাড়ে ৯টায় ইয়াসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার। ওই সময়ে ফ্রেজারগঞ্জে ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬৮ কিলোমিটার।