নয়াদিল্লি: রাজধানীর দূষণ নিয়ে প্রবল উষ্মা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকার, কয়েকটি রাজ্য সরকারকে তিরস্কার করল সুপ্রিম কোর্ট। নয়াদিল্লির বাতাসের গুণমান ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। তা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি, প্রশ্ন তুলে বিচারপতি অরুণ মিশ্র কেন্দ্রের তরফে হাজির হওয়া সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে বলেন, কেন গ্যাস চেম্বারে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে মানুষকে? একবারে মেরে ফেলাই তো ভাল। ১৫টা বস্তায় বিস্ফোরক ভরুন। কেন মানুষকে এত কষ্ট পেতে হবে? দিল্লিতে শুধু পরস্পরকে দোষারোপ চলছে। কেন্দ্র, রাজ্যগুলি- আপনারা একে অপরকে দুষছেন। এটা রাজনৈতিকভাবে পরিচালিত দূষণ। সব কিছুই এই আদালতের নাকের ডগায় চলছে। আমাদের সব মেনে নিতে হচ্ছে। আমি আক্ষরিক অর্থেই হতবাক।
দিল্লি, সংলগ্ন অঞ্চল, উত্তর ভারতের অন্যত্র বায়ু দূষণের সমস্যা নিয়ে পিটিশনের শুনানি চলাকালে ক্ষোভ জানায় সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে দিল্লির বাতাসের গুণমান এখনও ‘খারাপ’ পর্যায়েই রয়েছে।
কেন্দ্র ও দিল্লি সরকারকে ‘মতভেদ দূরে সরিয়ে রেখে একসঙ্গে বসে’ রাজধানীর নানা এলাকায় ১০ দিনের মধ্যে বায়ু শোধনকারী স্তম্ভ বসানোর প্ল্যান চূড়ান্ত করার নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
দিল্লির আশপাশের রাজ্যগুলিতে ফসল পোড়ানোয় সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু রাজধানীর বাতাস পরিশোধনে কিছুই করতে পারেনি, এই অভিযোগে কেন্দ্র ও বাকি রাজ্যগুলির তীব্র সমালোচনা করে সু্প্রিম কোর্ট। কেন্দ্র ও সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির সাফাইয়ে সন্তুষ্ট হতে না পেরে বিচারপতিরা উপসংহার টানেন, রাজনীতি ও পারস্পরিক দোষারোপ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পথে বাধা হয়ে উঠছে বলে মনে হয়। বেঞ্চ বলেছে, গোটা দুনিয়া আমাদের দেখে হাসছে। মানুষের আয়ু কমিয়ে দিচ্ছেন আপনারা। প্রসঙ্গত, দিল্লির বায়ুদূষণ রোধে ব্যর্থতার অভিযোগে অনেক দিন ধরেই সরকারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট। আগের শুনানিগুলিতে আইনি অফিসারদের তিরস্কার করে হরিয়ানা ও পঞ্জাব সরকারের শীর্ষ অফিসারদের ১০ দিনের মধ্যে একসঙ্গে তত্পর হয়ে স্ব স্ব রাজ্যে ফসল পোড়ানো বন্ধ করতে বলেছিল শীর্ষ আদালত। আগের শুনানিতে সরকার জানিয়েছিল, হরিয়ানা ফসল পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ করেছে, পঞ্জাব করেনি। এজন্য পঞ্জাব সরকারের উদ্দেশে শীর্ষ আদালত বলেছিল, আপনারা ব্যবস্থা নিতে পারছেন না বলে এনসিআরের মানুষজনকে মরতে হবে, ক্যান্সারে ভুগতে হবে! আদালত নির্দেশিত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসারদের জরিমানার হুঁশিয়ারিও দেন বিচারপতি।