ঘাটাল, সোমনাথ দাস : বর্ষা এলেই বন্যার ভ্রুকূটি। শিলাবতীর জল বাড়লে এখনও বুক কাঁপে ঘাটালবাসীর। বন্যার ধ্বংসলীলার দগদগে ঘা ফিরে ফিরে আসে ফি বছর। এবারও একদিকে ঝুমি নদীর জল, অন্যদিকে শিলাবতীর জল এবং অবিরাম বৃষ্টিপাত- সব মিলিয়ে ঘাটাল এখন পুরোপুরি জলের তলায়। ফলে, আশঙ্কার প্রহণ গুণছেন মানুষ।

ঘাটাল-দাসপুরবাসীকে এই ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় ফি বছর। এবারও গ্রামীণ এলাকার সাথে সাথে জল ঢুকেছে পৌর এলাকাতেও। জলবন্দি হয়ে পড়েছেন সেখানকার মানুষজন। বাজার-হাট হোক বা চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়া, সবকিছুতেই তাল গাছের না হলে টিনের ডোঙাই ভরসা মানুষের। 


টানা বৃষ্টিতে ঘাটালের দু'নম্বর পৌর এলাকায় বহু মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। এরকমই দুর্দশার মধ্যে রয়েছে জানা পরিবার। এই পরিবারের সঞ্জীববাবু অসুস্থ। তিনি ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছেন তালগাছের ডোঙা চালিয়ে। সঞ্জীববাবুর বক্তব্য, জন্মের থেকে শুনে আসছি মাস্টারপ্ল্যানের কথা। এখনও পর্যন্ত তার কিছুই চোখে দেখতে পেলাম না। আমরা আশাও ছেড়ে দিয়েছি। ও আর কোনওদিন হবে না।


একইভাবে প্রতিমা জানা বলেন, আমার 60 বছর বয়স হয়ে গেল। প্রায় 40 বছর ধরে শুনছি, মাস্টার প্ল্যান হবেই। এখনও পর্যন্ত তা হল না। আমরা এভাবেই প্রত্যেক বছর জলবন্দি অবস্থায় কাটাই।


এবিষয়ে ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, তৃণমূল সরকার উন্নয়নে ব্যর্থ। তৃণমূল সরকারের জন্যই মাস্টারপ্ল্যান কার্যকরী হয়নি।


অন্যদিকে পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ও ঘাটাল তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দিলীপ মাজি বলেন, বিধায়ক কিছু জানেন না। ওঁকে পড়াশোনা করতে হবে। মাস্টারপ্ল্যানের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও সহযোগিতা করেনি। যতটুকু ক্ষমতা সেই অনুযায়ী, রাজ্য সরকার মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু করে দিয়েছে।


প্রসঙ্গত, প্রতি বারই ভোটের আগে ঘাটার মাস্টারপ্ল্যান ইস্যু হয়ে ওঠে রাজনৈতিক মঞ্চে। কিন্তু, এখনও সমস্যামুক্ত নন ঘাটাল-দাসপুর এলাকার মানুষ। ভোগান্তির ছবি অব্যাহত। কবে মিলবে মুক্তি ? বর্ষা এলেই বার বার সামনে চলে আসে এই প্রশ্ন।