কলকাতা: ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে বৃহত্তর বেঞ্চে আবেদন রাজ্য সরকারের। ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। গত ১৮ জুন এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার দাবিতেই বৃহত্তর বেঞ্চের দ্বারস্থ হল রাজ্য।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবারের  নির্দেশে ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়ে রাজ্য সরকারের  সমালোচনা করে  কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদের রাজ্যে এসে সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার কথাও বলেছে আদালত। ভোট পরবর্তী অশান্তির অভিযোগে এন্টালির পরাজিত বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল-সহ একাধিক ব্যক্তি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার সেইসব মামলার একত্রে শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। 
প্রথমে রাজ্যে ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়ে একাধিক অভিযোগ তোলেন মামলাকারীদের আইজীবীরা। যা শুনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, ভোট মিটে যাওয়ার পর, দলে দলে মানুষ মিছিল করে জমায়েত করে বলছেন, আমরা আগে যা করেছি ভুল করেছি, এখন ঠিক করতে চাই। এই ধরনের দৃশ্য আমি কোনওদিন দেখিনি। এ ধরনের অভিযোগ উঠলে, আইন অনুযায়ী পুলিশের যা করণীয়, পুলিশ সেটা করছে না। 
প্রথমে তো রাজ্য সরকার তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ, অস্বীকার করছিল। কিন্তু মামলার এই পর্যায়ে আমাদের কাছে বেশকিছু ঘটনার তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। এই ধরনের ঘটনা ঘটলে, রাজ্যকে অবিলম্বে পদক্ষেপ করা উচিত। রাজ্য চুপ করে বসে থাকতে পারে না। 
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, নির্যাতন শুধুমাত্র শারীরিক হয় না। মানুষকে কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করলেও, তাঁর মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়। 
অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপের আশ্বাস দেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। তারপর বিচারপতি হরিশ টন্ডন বলেন, আপনারা (রাজ্য) বলছেন যে, একাধিক অভিযোগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু কার বিরুদ্ধে, কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। সেটাই মূল সমস্যা। 
এর আগে এন্টালিতে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর জন্য ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তাতে জাতীয় ও রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের একজন করে মোট দুজন এবং স্টেট লিগাল সার্ভিসেস অথরিটির একজন প্রতিনিধি ছিলেন। সেই কমিটির রিপোর্টও ওইদিন জমা পড়েছিল আদালতে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রয়োজন মনে করলে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে পারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তাকে সবরকম সহযোগিতা করতে হবে রাজ্য সরকারকে। কোথাও বাধা দেওয়া হলে সেটা আদালত অবমাননার সামিল হবে।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৩০ জুন। তার আগেই রাজ্য সরকার ওই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাল রাজ্য়।