নয়াদিল্লি: পাঁচ বছরের সংসার। কিন্তু একটা ফোনেই তিন তালাক দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করলেন আমেরিকার এক নাগরিক। ভারতে তিন তালাক বেআইনি হওয়া সত্ত্বেও এমন ঘটনায় কেন্দ্রের দ্বারস্থ হায়দরাবাদ নিবাসী ওই পরিবার।
২০১৫ সালে আমেরিকার ওই নাগরিকের সঙ্গে বিয়ে হয় হায়দরাবাদের ওই তরুণীর। আচমকাই গত জুলাইয়ে একদিন ওই তাঁর বাবাকে ফোন করেন তরুণীর স্বামী। ফোনেই তিন তালাক দেন। ওই তরুণী বলেছেন, ’’ মাস দুয়েক আগে আমার বাবাকে ফোন করেছিলেন আমার স্বামী। স্পিকার অন করে উনি আমাকে তিন তালাক দেন।‘‘ এভাবে তিন তালাক দিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তরুণী ও তার পরিবার। কিন্তু বিচ্ছেদের কোনও কাগজপত্র না থাকায় অসুবিধায় পড়েছেন তরুণীর বাবা-মা। তরুণীর মা বলেছেন, ’’কোনও কারণ ছাড়াই তালাক দিয়ে ওর প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আমরা আবার ওর বিয়ে দিতে চাই। কিন্তু কোনও কাগজ না থাকায় অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। আমরা খোরপোষ বাবদ কিছু পাচ্ছি না। বিচ্ছেদের কাগজপত্র নেই। আমার মেয়ে বিচার পাক, এটাই চাই।‘‘
গত বছরের জুলাইয়ে তিন তালাক প্রথাকে ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য করে আইন পাশ করেছিল সংসদ। এই আইন না মানলে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। এই আইন পাশের আগে তিনবার তালাক উচ্চারণ করলেই স্ত্রীকে তালাক দিতে পারতেন মুসলিম স্বামী। কিন্তু গত বছর আইন পাশ হওয়ার পর থেকে এটি নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। বিলটি পাশ হওয়ার সংসদে দাঁড়িয়েও একে ঐতিহাসিক দিন আখ্যা দিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও উচ্ছ্বসিত হয়ে ট্যুইট করেছিলেন।২০১৭ সালে তিন তালাক প্রথাকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
গত বছরের পয়লা অগস্ট থেকে ভারতে নিষিদ্ধ হলেও এখনও তিন তালাক মুছে যায়নি। ফোনে তিন তালাক দেওয়ার অভিযোগ জানিয়ে চলতি বছরের জুলাইে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আলবিনা ইমাম কুরেশি। গত বছরের নভেম্বরে পুত্র সন্তান না হওয়ায় তেলঙ্গানায় স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছিলেন স্বামী। পরে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।