নিউইয়র্ক: টানা ১২ মাস বেড়েই চলেছে বিশ্বের খাদ্যমূল্য। মে মাস পর্যন্ত হিসেব বলছে, প্রতি বছর প্রায় ৪০ শতাংশের কাছাকাছি বেড়েছে খাদ্যের দাম। এই তথ্য দিচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জের খাদ্যমূল্যের সূচক।


করোনাকালে রেহাই দিচ্ছে না খাদ্যমূল্য। আর্থিক পরিস্থিতি না শোধারালেও বেড়েই চলেছে খাবারের জিনিসের দাম। রাষ্ট্রপুঞ্জের খাদ্যমূল্যের সূচক বলছে, গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ খাবারের মূল্য বেড়েছে এপ্রিল থেকে মে মাসে। ৪.৮ শতাংশ মূল্য বেড়েছে এই মাসে। যা সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জের খাদ্য ও কৃষি সংগঠনের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ আবদুলরেজা আবাসেইন বলেন, ''হঠাৎ করে ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা বেড়ে গিয়েছে চিনে। পাশাপাশি ব্রাজিলের খরা প্রভাব ফেলেছে খাবারের মূল্য বৃদ্ধিতে। এ ছাড়াও ভেজিটেবিল অয়েল, চিনি ও খাদ্যশস্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্বের খাদ্য মূল্য বেড়ে গিয়েছে।''


আবাসেইন জানান, যেভাবে বিশ্বে হঠাৎ করে খাদ্যের চাহিদা বেড়েছে তা অবাক করেছে অনেককেই। পাশাপাশি এই চাহিদার জোগান দেওয়া একটা কঠিন কাজ। তবে শুধু খাদ্যের দাম বেড়েছে এমনটা নয়। খাবারের পাশাপাশি দাম বেড়েছে স্টিল, শক্তি সম্পদ ছাড়ও প্রায় সবকিছুর। এ ক্ষেত্রে যে দেশগুলি 'অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কর্পোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট'-এর গোষ্ঠীভুক্ত তাদের দ্রব্যমূল্য বেড়েছে সবথেকে বেশি। ২০০৮ সালের পর গত এপ্রিল মাসে এই মূল্য সূচক সর্বোচ্চ স্থানে পৌঁছেছে।


এখানেই শেষ নয়। বিভিন্ন দেশে বায়োডিজেল, মাংসের ও দুধের দাম বৃদ্ধির ফলে খাদ্যমূল্য অনেকটাই বেড়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট বলছে, ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারির পর পাম অয়েলের কোটেশন সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছেছে। যা স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বের খাদ্যমূল্য বৃদ্ধিতে ইন্ধন জুগিয়েছে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে এই পাম অয়েল কম উৎপাদন হওয়ায় মূল্যবৃদ্ধিতে তা প্রভাব ফেলেছে। 


আবাসেইনের মতে, ব্রাজিলের খরা চিন্তা বাড়িয়েছে বিশ্বের শস্য বাজারের। চলতি বছরে খরার ফলে সেখানে ভুট্টার চাষের ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে যা নিয়ে চিন্তিত খোদ রাষ্ট্রপুঞ্জ। নতুন করে শস্য উৎপাদিত না হলে আরও দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তথ্য বলছে, গত বছর থেকে আমেরিকায় খাদ্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। এখনও সেই দাম স্বাভাবিক হয়নি। আমেরিকায় এপ্রিল মাসে খাবারের দাম বেড়েছে ২.৪ শতাংশ।