কলকাতা: গত বছর ও চলতি বছর এখনও পর্যন্ত মহাসাগরের উপরিভাগের তাপমাত্রা যে হারে বাড়ছে, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মার্কিন পরিবেশবিদদের একাংশ। এই নিয়ে 'ন্যাশনাল ওশিয়ানিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন' ( National Oceanic and Atmospheric Administration) এবং 'ইউনিভার্সিটি অফ মেইন' যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, তা চিন্তার। এবং তাঁদের ব্যাখ্যা, এর পিছনে এক দিকে যেমন 'এল নিনোর' কারিকুরি রয়েছে, অন্য দিকে রয়েছে মানুষের কারণে ক্রমবর্ধমান বিশ্ব উষ্ণায়ন। 


একনজরে পরিসংখ্যান...
'ন্যাশনাল ওশিয়ানিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন' -র ওশেনোগ্রাফার গ্রেগরি সি জনসন হালে মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে জানান, ২০২৩ সালে বিশ্বের সবকটি মহাসাগরের উপরিভাগের তাপমাত্রা তার আগের বছরের তুলনায় গড়ে .২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছিল। তাঁর মতে, 'কম-বেশি গড়ে প্রতি কুড়ি বছর মহাসাগরের উপরিভাগের তাপমাত্রা যতটা গরম হয়ে থাকে, সে বার এক বছরেই ততটা বেড়ে যায় যা কিনা বিশাল।' এর প্রভাব জলজীবন এবং গোটা বিশ্বের আবহাওয়ার উপর পড়ার কথা, আশঙ্কা তাঁদের। যেমন, এই উষ্ণায়নের ফলে আরও 'হারিকেন'-গুলি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। একদিকে গ্রীষ্ণের দাবদাহ বাড়তে পারে, তেমনই চোখ রাঙাতে পারে অতিবর্ষণ। 
বস্তুত, মহাসাগরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা যে জলজীবনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে, তার হাতেগরম প্রমাণ অস্ট্রেলিয়ার 'গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ।' চলতি মাসেই, সে দেশের প্রশাসন, আকাশপথে নজরদারি চালিয়ে জানিয়েছে, এই প্রবাল প্রাচীরে এখন সপ্তম 'মাস ব্লিচিং ইনসিডেন্ট'-র তাণ্ডব চলছে। মূলত, তীব্র তাপের ফলে যখন বিপুল প্রবাল নিঃশেষ হতে থাকে, তাকেই 'মাস ব্লিচিং ইনসিডেন্ট' বলা হয়। তীব্র গরমের ফলে প্রবাল নিজেদের দেহ থেকে এমন এক ধরনের  'অ্যালগি' বের করে ফেলে যারা কিনা তাদের খাদ্য সংগ্রহ করে রাখে। এই 'অ্যালগি' বেরিয়ে আসায় একসময়ে 'খিদের জ্বালায়' শেষ হতে থাকে প্রবাল। কিছুটা সেই ঘটনাই ঘটছে অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ-এ।


আর যা...
উত্তর অতলান্তিকে এই তাপমাত্রার বাড়বৃদ্ধি যেন অভূতপূর্ব, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এবং এতে বিপদের আশঙ্কা আরও বেশি। কেন? তাঁদের মতে, বহু 'হারিকেন'-র উৎপত্তিস্থল এই এলাকা। ফলে এখানকার তাপমাত্রা বাড়লে সেই 'হারিকেন'-গুলি আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকছে। চলতি বছরে, এখনও পর্যন্ত মহাসাগরের উপরিভাগের তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই ট্রেন্ড একই রকম। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বছরের পরবর্তী অংশেও যদি এই ছবি থাকে এবং 'লা নিনা' খেল দেখাতে শুরু করে, তা হলে 'ভয়ঙ্কর সক্রিয় হারিকেন'-র কবলে পড়তে পারে পৃথিবীর নানা প্রান্ত। সব মিলিয়ে আশঙ্কার সঙ্কেত মহাসাগরের জলে। 


আরও পড়ুন:মোটোরোলা এজ ৫০ প্রো ফোন সম্পর্কে এতদিনে কী কী তথ্য জানা গিয়েছে? রইল তারই তালিকা