নয়াদিল্লি: আচমকা সব বুকিং বাতিল করে দিয়েছে তারা। বাতিল করেছে সমস্ত বিমানের উড়ান। এ বার নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার পথে হাটল বিমান সংস্থা Go First. ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল (NCLT)-র কাছে সেই মর্মে আবেদন জমা দিয়েছে তারা। স্বেচ্ছায় দেউলিয়া ঘোষণার আইনি প্রক্রিয়া চালু করতে আবেদন জানিয়েছে।


ওয়াদিয়া গোষ্ঠীর মালিকানাধীন Go First


নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার নেপথ্যে বিকল ইঞ্জিনকে দায়ী করেছে ওয়াদিয়া গোষ্ঠীর মালিকানাধীন Go First. তাদের দাবি, একের পর এক বিমানের ইঞ্জিন লাগাতার বিকল হয়ে পড়ছে। আমেরিকার যে প্র্য়াট অ্যান্ড হুইটনি’জ (P&W) ইন্টারন্যাশনাল এ্যারো ইঞ্জিন্স থেকে ব্য়বহৃত ইঞ্জিন তাদের কাছে এসে পৌঁছতো, তার সরবরাহও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।


এর ফলে অর্ধেক বিমান আগেই বসিয়ে দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াদিয়া গোষ্ঠী। তাদের দাবি, অর্ধেক বিমান বসে যাওয়ায় অর্থনৈতিক সঙ্কট এতটাই গ্রাস করে ফেলেছে যে, বাকি বিমান ব্যবহার করেও পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।


Go First জানিয়েছে, দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হলে, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে সংস্থার তরফে পরিষেবা প্রদান করা হবে। তার জন্য ইন্টারিম রেজলিউশন প্রফেশনাল এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সবরকম ভাবে সহযোগিতা করবে Go First. সংস্থার বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের দিকটিও দেখা হবে।


জেট এয়ারওয়েজের পর এ বার নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার পথে এগোল Go First. মঙ্গলবার শুরুতে বুধ এবং বৃহস্পতিবারের সমস্ত বুকিং ক্যানসেল করে তারা। গ্রাহকরা জানিয়েছেন, পরিচালনা সংক্রান্ত সমস্যার কথা জানিয়ে ইমেলে বিমান বাতিলের কথা জানানো হয়। তার জন্য তাদের শোকজ নোটিসও ধরিয়েছে দেশের বেসামরিক বিমান পরিষেবা সংস্থা DGCA. আগে থেকে এ নিয়ে সংস্থার তরফে কিছু জানানো হয়নি বলে DGCA জানিয়েছে।


তবে Go First-এর এই সিদ্ধান্তে হতবাক নয় বাজার। কারণ বেশ কিছু দিন ধরেই অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এই বিমান সংস্থা। ইঞ্জিন সরবরাহ যেমন রয়েছে, তেমনই এই সমস্যার নেপথ্য়ে তেল সংস্থাগুলির সঙ্গে বিবাদও দায়ী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তেল সংস্থাগুলি ধারবাকিতে জ্বালানি সরবরাহে রাজি নয়। দিনের দিন টাকা মিটিয়ে নেওয়ার নিয়ম শুরু হয়েছে। আর্থিক অনটনের জেরে সেই ধারা মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না Go First-এর তরফে।


বেশ কিছু দিন ধরেই টালমাটাল অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল সংস্থাটি


নিজেদের ওয়েবসাইটে গো ফার্স্ট জানিয়েছে, তাদের কাছে ৫৯টি বিমান রয়েছে, যার মধ্যে ৫৪টি A320 Neo এবং পাঁচটি A320 CEO. কিন্তু অর্থনৈতিক ভাবে বেশ কিছু দিন ধরেই টালমাটাল অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল সংস্থাটি। তার জন্য অর্ধেক বিমান আগেই বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সংস্থার ৫ হাজার কর্মী বেতনও পাচ্ছিলেন না নিয়মিত। তার মধ্যেই চলতি সপ্তাহে দু'দিনের সমস্ত উড়ান বাতিল করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারকেও এ নিয়ে আগেই চিঠি দেওয়া হয়েছে তাদের তরফে, এমনই দাবি Go First-এর।