নয়াদিল্লি: সাম্প্রতিক কালে একাধিক বার রাজ্য এবং রাজ্যপাল সংঘাত দেখা গিয়েছে। বাংলা-সহ দেশের একাধিক রাজ্যেই বিস্তর হইচই হয়েছে তা নিয়ে। সেই আবহে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল দেশের সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। তারা জানিয়েছে, অনন্তকাল আটকে না রেখে, রাজ্য বিধানসভায় কোনও বিল পাস হলে, যত দ্রুত সম্ভব সেই বিল ছেড়ে দিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যপালকে। দেশের সংবিধানে তেমনই বিধান রয়েছে, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিল দেশের শীর্ষ আদালত (Governor Power)।
যত শীঘ্র সম্ভব রাজ্যপালকে বিল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ
সোমবার তেলঙ্গানা সরকারের একটি মামলার শুনানি চলছিল শীর্ষ আদালতে। রাজ্যপাল (Governors) তামিলিসাই সৌন্দর্যরাজন রাজ্য বিধানসভায় পাস হয়ে যাওয়া ১০টি বিল কিছুতেই ছাড়ছেন না বলে অভিযোগ ছিল কে চন্দ্রশেখর রাও সরকারের। যত শীঘ্র সম্ভব রাজ্যপালকে বিল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হোক বলে আদালতে আবেদন জানিয়েছিল তেলঙ্গানা সরকার। শেষ পর্যন্ত রাজ্যপাল বিল ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানা গেলে, পরে মামলা খারিজ হয়ে যায়।
তবে তার আগে, সোমবার তার শুনানিতেই সংবিধানে লিপিবদ্ধ অনুচ্ছেদ ২০০ স্মরণ করান প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং পিএস নরসিংহের ডিভিশন বেঞ্চ। অনুচ্ছেদ ২০০ অনুযায়ী, বিধানসভায় পাস হওয়া বিল অনুমোদন, প্রত্যাখ্যান, স্থগিত রাখা এবং কিছু ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির মতামত নেওয়ার জন্য পাঠানোর অধিকার অর্পিত রয়েছে রাজ্যপালের হাতে। তবে রাজ্যপালের সুপারিশ সত্ত্বেও যদি বিলে কোনও সংশোধন না ঘটানো হয়, সেক্ষেত্রে বিল ছেড়ে দিতে হয় রাজ্যপালকে। আবার অর্থনীতি সংক্রান্ত বিলের ক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষমতা নেই রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন: Kedarnath Opens Door : ফুল-তুষারপাত সহযোগে হর্ষের রেশ, কপাট খুলল কেদারনাথের
আদালত জানিয়েছে, বিধানসভায় কোনও বিল পাস হলে, যত দ্রুত সম্ভব তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্যপালকে। কিছু সংশোধনের থাকলে অবিলম্বে তা বিবেচনার জন্য পাঠাতে হবে। তবে যা-ই করা হোক না কেন, দ্রুত করতে হবে, যেমনটি সংবিধানের ২০০ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে। 'যত দ্রুত সম্ভব' কথাটির যে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, তা-ও স্মরণ করিয়ে দেয় আদালত।
তেলঙ্গানা সরকারের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী দুশ্যন্ত দাভে। তিনি অভিযোগ করেন যে, একাধিক অ-বিজেপি রাজ্যে রাজ্যপালকে দিয়ে বিল পাস করাতে সমস্যা হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ফেলে রাখা হচ্ছে বিধানসভায় পাস হওয়া বিল। একেবারে এ নিয়ে নির্দেশ দেওয়া হোক বলে আদালতে আবেদন জানান তিনি। বলেন, "নির্বাচিত সরকারকে রাজ্যপালের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে।"
অ-বিজেপি রাজ্যগুলিতে বার বার রাজ্যপালের সঙ্গে নির্বাচিত সরকারের সংঘাত
শুধু তেলঙ্গানাই নয়, ইদানীং কালে কেরল, দিল্লি, তামিলনাড়ু, ছত্তীসগঢ়, পশ্চিমবঙ্গের মতো অ-বিজেপি রাজ্যগুলিতে বার বার রাজ্যপালের সঙ্গে নির্বাচিত সরকারের সংঘাত দেখা গিয়েছে। সাংবিধানিক পদে থেকে রাজ্যপাল রাজ্যের প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ করছেন, সরকারের কাজে বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন, বিল আটকে রাখছেন ইচ্ছাকৃত ভাবে, এমন অভিযোগও উঠেছে।