আহমেদাবাদ : ৯ অগাস্ট। সালটা ২০২৩। নদিয়ার এক তরতাজা ছাত্র মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ভয়ানক র‍্যাগিং-রোগের আক্রমণে শেষ হয়ে যায় একটা স্বপ্ন। একটা জীবন। সেই মৃত্যুর ঘটনার পরও যাদবপুর সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এত ঘটনার পরও কি  কোনও শিক্ষা হচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ? আবার ও ছাত্রমৃত্যু। এবার প্রাণ গেল এক মেডিক্যাল ছাত্রের। হস্টেলের মধ্যেই প্রাণ হারাল গুজরাতের মেধাবী ছাত্রটি। 


ঘটনাস্থল গুজরাতের এক মেডিক্যাল কলেজ।  প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে ডেকে পাঠায় সিনিয়ররা। তারপর সেই ব়্যাগিং। কলেজে সিনিয়রদের অগ্রাহ্য রবে কার সাধ্যি। র‌্যাগিংয়ের সম্মুখীন হতেই হবে জুনিয়রদের। অভিযোগ ওই ছাত্রকে ঠা-ঠা রোদে তিন ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখে সিনিয়ররা। তার জেরেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়েন নবাগত ছাত্রটি। 


অনিল মেথানিয়া এই বছরই ধরপুর পাটনের জিএমইআরএস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হন।  অনিলের সঙ্গে সঙ্গে প্রথম বর্ষের বেশ কয়েকজন ছাত্রও ছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। অভিযোগ, হস্টেলে তৃতীয় বর্ষের ছাত্ররা নতুনদের পরিচয়পর্বের জন্য ডেকে পাঠায়। যাদবপুর কাণ্ডের সময়ও এই 'ইন্ট্রো' যে কত মারাত্মক হতে পারে দেখা গিয়েছে। এখানে অনিলকে টানা তিন ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয় রোদের মধ্যে। পরিচয়পর্ব মানেই এসব পৈশাচিক আনন্দ , এমন অভিযোগ অনেকেরই। এর আগেও একাধির কলেজে ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ ও তার মর্মান্তিক পরিণতির কথা সামনে এসেছে।  


অভিযোগ, তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর ১৮ বছর বয়সী অনিল ভেঙে পড়েন এবং অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি পুলিশের কাছে একটি বিবৃতি রেকর্ড করেন যে তাকে তিন ঘন্টার জন্য দাঁড় করানো হয়েছিল। এর পরেই তিনি মারা যান। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া যাবে। 


অনিলের এক তুতো ভাই ধর্মেন্দ্র এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, গুজরাতের সুরেন্দ্রনগর জেলায় তাঁদের বাড়ি।  পাটানের কলেজ থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে। ধর্মেন্দ্র জানান, ঘটনার পর কলেজ থেকে মৃত ছাত্রের বাড়িতে একটি ফোন যায়।  বলা হয়েছিল যে অনিল অসুস্থ এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যখন তাঁরা কলেজে  এসে পৌঁছান,তখন সব শেষ ! পরে তাঁরা জানতে পারেন,  তৃতীয় বর্ষের ছাত্রদের ব়্যাগিংয়ের শিকার ভাই । এখানেও ফের একবার শোনা গেল, উই ওয়ান্ট জাস্টিস। 


মেডিক্যাল কলেজের ডিন হার্দিক শাহ জানান, ছাত্রটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে জানার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশকে 


আমরা যখনই জানতে পারি যে তিনি ভেঙে পড়েছেন, আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়েছিলাম। অসুস্থ ছাত্রই সে সময় পুলিশকে বলেছিলেন তিনি ব়্যাগিংয়ের শিকার। তাঁকে তিন ঘন্টা ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষও বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পরিবারও অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।  এনডিটিভিকে এক পুলিশ অধিকর্তা কে কে পান্ড্য জানান, মৃত ছাত্রের বাবা অভিযোগ দায়ের করেছেন। ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ নিয়েও কলেজের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে পুলিশ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, ১৫ জন সিনিয়র ছাত্রের নাম FIR-দায়ের হয়েছে।  


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।