নয়াদিল্লি: গণধর্ষণে অভিযুক্ত হরিয়ানার বিজেপি সভাপতি মোহনলাল বাদোলি। গায়ক রকি মিত্তল ওরফে জয় ভগবান এবং তাঁর বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলা দায়ের হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন নয়াদিল্লির বাসিন্দা এক মহিলা। ২০২৩ সালের ৩ জুলাই তাঁরা গণধর্ষণের ঘটনা ঘটান বলে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। (Mohan Lal Badoli)


নির্যাতিতা জানিয়েছেন, হরিয়ানবার কসৌলিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন অফিসের ঊর্ধ্তন একজন এবং এক বান্ধবী। সেই সময় মোহনলাল এবং রকি, দু'জন মিলে তাঁকে গণধর্ষণ করেন। গণধর্ষণের পর তাঁকে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোহ। ৩৭৬ডি (গণধর্ষণ) এবং ৫০৬ (অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন) ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে মোহনলাল এবং রকির বিরুদ্ধে। (Haryana News)


পুলিশকে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, বান্ধবীর সঙ্গে ঘুরছিলেন তিনি। সেই সময় অভিযুক্তদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তাঁর। একজন মোহনলাল বলে নিজের পরিচয় দেন। অন্য জন রকি মিত্তল ওরফে জয় ভগবান হিসেবে পরিচয় দেন নিজের। আলাপ পর্ব চলাকালীন রকি নিজের মিউজিক অ্যালবামে তাঁকে নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব দেন। সেই মর্মে চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে আশ্বাসও দেন।


অন্য দিকে, সরকারি চাকরির করে দেবেন বলে জানান মোহনলাল। সরকারের কত উঁচুস্তরে তাঁর আনাগোনা জানানয 
অভিযোগ, সেই নিয়ে কথাবার্তা সারতেই ওই দুই মহিলাকে হোটেলের ঘরে নিয়ে যান মোহনলাল এবং রকি। আলাপ-আলোচনার মাঝে মদ্যপানের প্রস্তাব দেওয়া হয়। দুই মহিলাই তা প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু না শুনতে রাজি ছিলেন না মোহনলাল এবং রকি।


জোর করে ওই দুই মহিলাকে তাঁরা মদ্যপানে বাধ্য করেন এবং তার পর যৌন নির্যাতন শুরু হয় বলে অভিযোগ। আপত্তি জানাতে গেলে তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতা। তাঁর দাবি, কথা না শুনলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।  এর পর পালা করে মোহনলাল এবং রকি তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ নির্যাতিতার। নগ্ন অবস্থায় তাঁর ছবি এবং ভিডিও-ও তোলা হয় বলে দাবি করেছেন তিনি।  


ওই মহিলা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললে, পুলিশের কাছে গেলে পৃথিবী থেকে তাঁকে গায়েব করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন মোহনলাল এবং রকি। মাস দুয়েক আগে পঞ্চকুলায় ডেকে পাঠানো হয় তাঁদের। মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়। এর পর রকির ঠিকানা কোনও ভাবে জোগাড় করতে সফল হন তাঁরা। মোহনলালের ঠিকানাও জোগাড় করেন।  তাঁদের ফোন নম্বরও হাতে আসে। ওই দু'জনের কড়া শাস্তির আবেদন জানিয়েছেন নির্যাতিতা। তাঁর যে নগ্ন ছবি এবং ভিডিও রেকর্ড করেছিলেন মোহনলাল এবং রকি, তা মুছে দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন।


মোহনলাল যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, "সব ভিত্তিহীন অভিযোগ। এমন কিছুই ঘটেনি। আমি কিছুই জানি না। মিথ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দিল্লির নির্বাচনের আগে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ভুয়ো মামলা করা হয়ে থাকতে পারে।" পুলিশ সুপার গৌরব সিংহ জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।