নয়াদিল্লি: কোভ্যাক্সিনে বাছুরের রক্তরস ব্যবহারের দাবি ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। দেশজুড়ে বিতর্কের আবহে এবার মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। ট্যুইট করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "কোভ্যাক্সিনের চূড়ান্ত প্রোডাক্টে বাছুরের রক্তরস নেই। কোভ্যাক্সিনে বাছুরের রক্তরস থাকে না। ভুল ভাবে তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে। বহু দশক ধরে ভ্যাকসিন তৈরিতে প্রাণীর রক্তরস ব্যবহার করা হয়। কিন্তু, চূড়ান্ত পর্যায়ে ভ্যাকসিনে আর রক্তরস থাকে না।"
গৌরব পান্ধী নামে এক ব্যক্তির করা ট্যুইট ঘিরেই বিতর্কের সূত্রপাত। গৌরব পান্ধীর ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে পরিচয় দেওয়া হয়েছে, জাতীয় কংগ্রেসের IT সেলের ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেটর। তথ্য জানার অধিকার আইনের নথি ট্যুইটে পোস্ট করে মঙ্গলবার গৌরব পান্ধি দাবি করেন, একটি RTI-এর জবাবে মোদি সরকার স্বীকার করে নিয়েছে যে, কোভ্যাক্সিনে নবজাতক বাছুরদের সেরাম থাকে। যা ২০ দিনের কম বয়স্ক বাছুরদের হত্যার পর জমাট বাধা রক্ত থেকে সংগৃহীত একটি অংশ। এটা নৃশংস। এই তথ্য আগেই জনসমক্ষে আনা উচিত ছিল। এ প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। তাদের দাবি, ভেরো সেলের বিকাশের জন্য বিভিন্ন প্রাণীর রক্তরস ব্যবহার করা হয়। ভ্যাকসিন উত্পাদনে সহায়ক ভেরো সেল। দশকের পর দশক ধরে এই পদ্ধতি চলে আসছে। পোলিও, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন তৈরিতেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
দেশের মধ্যে যে দুটি ভ্যাকসিনকে প্রথম দফায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে রয়েছে কোভ্যাকসিন। আর এই বিতর্কের মধ্যে কোভ্যাকসিনের প্রস্তুতকারী সংস্থা ভারত বায়োটেকের তরফে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ভাইরাস ঘটিত রোগের ভ্যাকসিন তৈরিতে বাছুরের রক্তরস ব্যবহার করা হয়। এটা ব্যবহার করা হয় কোষের বৃদ্ধির জন্য। কিন্তু, তা কোভিড ভাইরাসের বৃদ্ধি বা প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয় না। কোভ্যাক্সিন খুবই পরিশুদ্ধ, এর মধ্যে শুধুমাত্র নিষ্ক্রিয় ভাইরাসই থাকে। ভ্যাকসিন উত্পাদনে বিশ্বজুড়ে দশকের পর দশক ধরে গবাদি পশুর রক্তরস ব্যবহার করা হয়। বাছুরের রক্তরস ব্যবহারের কথা স্বচ্ছতার সঙ্গে গত ৯ মাস ধরে বলা হয়েছে। কংগ্রেসকে ঝাঁঝালো আক্রমণ করেছে বিজেপিও। বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, আজ কংগ্রেস মহাপাপ করছে। দেশজুড়ে এই বিতর্কের আবহে পাল্টা ট্যুইট করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।