নয়াদিল্লি: করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের জারি করা লকডাউনের জেরে গরিবরা কাজ হারিয়ে খিদের জ্বালায় কষ্ট পাচ্ছে বলে জানিয়ে ট্যুইটারে সরব পি চিদম্বরম। প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে ট্যাগ করে একগুচ্ছ ট্যুইট করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেসের এই শীর্ষ নেতা। হাতে নগদ টাকা ফুরিয়ে আসায় আরও আরও বেশি মানুষ বিনা পয়সায় রান্না করা খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়াচ্ছেন বলে জানিয়ে গরিবকে নগদ টাকা হস্তান্তর, তাদের বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিলি করার আবেদন করেছেন চিদম্বরম। বলেছেন, শুধু যে সরকারের হৃদয় বলে কিছু নেই, তারাই চুপ করে থাকবে, কিছু করবে না। চিদম্বরম বলেছেন, অনেক বেশিসংখ্যক লোক যে হাতে টাকা ফুরিয়ে যাওয়ায়, বিনা পয়সায় রান্না করা খাবার সংগ্রহের জন্য লাইন দিচ্ছেন, তার বহুল প্রমাণ আছে।


চিদম্বরমের দাবি, তিনি অর্থনীতি সংক্রান্ত ও নৈতিক দুটি প্রশ্ন তুলেছেন, যার উত্তর বর্তমান সরকার দিতে পারেনি, আর সারা দেশ অসহায় হয়ে দেখছে। প্রথমটিতে প্রতিটি গরিব পরিবারের হাতে কেন সরকার অর্থ তুলে দিতে পারেনি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি, দ্বিতীয়টিতে অভিযোগ করেছেন, গরিবকে খাওয়াতে সরকার ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার গুদামে মজুত খাদ্যশস্য ব্যবহার করছে না। তিনি ট্যুইট করেছেন, কেন সরকার প্রতিটি গরিবকে ক্ষুধার কবল থেকে বাঁচাতে, নগদ টাকা হস্তান্তর করে তাদের সম্মান রক্ষা করতে পারছে না? কেন সরকার এফসিআইয়ের ভান্ডারে মজুত ৭৭ মিলিয়ন টন খাদ্যশস্যের কিছুটা সেই পরিবারগুলিকে বিনা মূল্যে বিলি করতে পারছে না, যাদের খুব প্রয়োজন?


প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সীমান্তে আটকে রয়েছেন হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক যাঁরা লকডাউনের ফলে কলকারখানা বন্ধ হওয়ায়, ভাড়াবাড়ির মালিক চলে যেতে বলায় হাজার হাজার মাইল দূরে গ্রামের বাড়ির দিকে হাঁটা শুরু করেছিলেন।
মোদি সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলার পন্থা নিয়ে বরাবর সরব চিদম্বরম। প্রধানমন্ত্রীর ৩ মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই তিনি ট্যুইট করেন, আমার প্রিয় দেশ, তুমি কাঁদো!
অর্থনীতির বিপর্যয় সামলাতে মোদি সরকার প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর রঘুরাম রাজন, নোবেল বিজয়ী অভিজিত্ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, জাঁ দ্রেজের, প্রভাত পট্টনায়কের মতো বিশেষজ্ঞদের মতামত কানে তোলেনি বলেও অভিযোগ তাঁর।