কলকাতা: ‘রাজ্য সরকার বিধায়কের খুনকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে। আমরা চাই সিবিআই তদন্ত হোক। উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে এই প্রতিক্রিয়া বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের।

এদিন দুপুরে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে রাজ্য পুলিশ মনে করছে ঘটনাটি একটি সম্ভাব্য আত্মহত্যার ঘটনা।’’

এই প্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘সরকারের আত্মহত্যার তত্ত্ব বিশ্বাসযোগ্য নয়। সুইসাইড নোট পুলিশই বিধায়কের পকেটে ঢুকিয়েছে। তদন্ত করলে সব উঠে আসবে।

তাঁর প্রশ্ন, যেখানে দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহ পেতে কালঘাম ছুটে যায় মানুষের, সেখানে এত দ্রুত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট কীভাবে প্রকাশ পেল?’

দিলীপ ঘোষের আরও দাবি, এই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আগে থেকেই তৈরি ছিল। তৃণমূল লাশের রাজনীতি করে ক্ষমতায় এসেছে। তৃণমূলের মুখে লাশের রাজনীতি শোভা পায় না। বাংলার আদালতের উপরে ভরসা নেই। প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে যাব বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

প্রসঙ্গত, হেমতাবাদের মৃত বিজেপি বিধায়কের গলায় ফাঁসের কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলেই ইঙ্গিত মিলেছে ফরেন্সিক পরীক্ষায়। প্রাথমিক অনুমান, ফাঁসের দাগ একটানা নয়। ময়নাতদন্তে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার ইঙ্গিত ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের।

তাঁদের মতে, কাউকে জোর করে মারা হলে, দাগ একটানা থাকত। কিন্তু একটানা নয় এমন দাগ, আত্মহত্যার ইঙ্গিত দেয়। গলায় ফাঁসের চিহ্ন অ্যান্টি মর্টেম, উল্লেখ ময়নাতদন্ত রিপোর্টে।

অর্থাত্‍ মৃত্যুর পর ঝোলানো হয়নি, গলায় ফাঁসের কারণেই মৃত্যু হয়েছে বিজেপি বিধায়কের। মত ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ, বিধায়কের দেহে অন্য কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। জোর করে ফাঁস দেওয়া হলে, অন্য আঘাতের চিহ্ন থাকত। প্রাথমিক মত বিশেষজ্ঞদের।

বিধায়ককে অচৈতন্য বা বেঁহুশ করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল কিনা, তা জানতেই দেহের কিছু অংশের রাসায়নিক পরীক্ষা করা হবে। ওই রিপোর্ট এলে এই বিষয়গুলি স্পষ্ট হবে, মত ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের।

এদিন স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, বিজেপি বিধায়কের জামার পকেট থেকে একটি নোট উদ্ধার হয়েছে। তাতে দু’জনের নাম নাম ও মোবাইলের নম্বর আছে। এলাকায় চলছিল টাকা লেনদেনের কারবার। মৃত্যুর পিছনে কোনও আর্থিক লেনদেন ছিল কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জানালেন স্বরাষ্ট্রসচিব। স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

এখানে বলে রাখা দরকার, গত বিধানসভা নির্বাচনে দেবেন্দ্রনাথ রায় হেমতাবাদ থেকে কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন।

গত বছর বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।  এদিন বিধায়কের মৃতদেহ নিয়ে রায়গঞ্জে মিছিল করে বিজেপি।