সিমলা: গ্রামের গরিব মানুষ। বলার মতো কিছুই তেমন হাতে নেই। কিন্তু সন্তানদের পড়াশোনা তো চালাতে হবে। আর এখন করোনাকালে অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে স্মার্টফোন। কারণ, লকডাউনের আবহে স্কুলের পড়াশোনা সবই তো অনলাইনে হচ্ছে। তাই স্মার্টফোন না থাকলে বন্ধ রাখতে হবে পড়াশোনা।


অগত্যা একটি গরু বেচে দিলেন ৬ হাজার টাকায়। গরু যাক, অন্তত দুই সন্তানের পড়াশোনাটা চলুক। এই মর্মস্পর্শী ঘটনাটি জ্বালামুখী এলাকার গুম্মার গ্রামের। দুই সন্তান অন্নু আর দীপ্পু যথাক্রমে চতুর্থ ও দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া। মার্চের পর থেকে আর স্কুলের পাঠই নেই। ক্রমে একটা সময়ে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। কিন্তু স্মার্টফোন নেই যে ঘরে। তাই গরু বিক্রি করে ফোন ঘরে আনলেন কুলদীপ কুমার।


গত এক মাস ধরে ৬ হাজার টাকা ঋণ পাওয়ার আশায় পরিচিত থেকে শুরু করে ব্যাঙ্কের কাছে ধার চেয়েছেন কুলদীপ। কিন্তু তাঁর আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে ভরসা করে তাঁর হাতে টাকা তুলে দিতে চায়নি কেউই। এদিকে স্কুল থেকেও বলা হয়, ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হলে একখানা স্মার্টফোন তো লাগবেই। কুলদীপ জানান, তাঁর কাছে ৫০০ টাকাই নেই, তো ৬ হাজার টাকা ফোনের জন্য তিনি কেমন করে জোগাড় করবেন। শেষটায় গরু বেচে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। গরু বেচে সন্তানদের জন্য ফোন নিয়ে এলেন বাবা।


কুলদীপ মাটির বাড়িতে থাকেন। কিন্তু বিপিএল কার্ড নেই তাঁর।ইন্টিগ্রেটেড রুরাল ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম (আইআরডিপি) কর্মসূচির কোনও সুবিধাও তিনি পান না। বার বার পঞ্চায়েতের কাছে গিয়ে নাম নথিভুক্ত করতে চেয়েও কোনও লাভ হয়নি। খবর জানতে পেরে শেষটায় জ্বালামুখীর বিধায়ক রমেশ ধাওয়ালা বিডিও এবং এসডিএমকে নির্দেশ দিয়েছেন কুলদীপকে আর্থিক সাহায্য করার জন্য।