শিমলা : বর্ষা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে হিমাচলপ্রদেশে। ২০ জুন থেকে ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে বর্ষাজনিত কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৬। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের তথ্য এমনই বলছে। মোট মৃতের মধ্যে ৬৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে বৃষ্টিজনিত বিপর্যয় যেমন- বন্যা, হড়পাবান, ধস, বজ্রপাত ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার কারণে। রাস্তা দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৮ জনের। এর মধ্যে অনেকগুলি ঘটনাই পিছল রাস্তার কারণে এবং ভারী বৃষ্টির সময় ধ্বংসাবশেষ ভেঙে পড়ার কারণে। 

এই রাজ্য এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ৩৩ আকস্মিক বন্যা, ২২ বার মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং ১৯টি ভূমিধসের সাক্ষী হয়েছে, যা পরিকাঠামোগত বিপর্যয় ডেকে এনেছে এবং মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে। মান্ডি, কুলু, কাংড়া এবং লাহৌল-স্পিতির মতো জেলাগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেখানে বন্যা এবং রাস্তাঘাট বন্ধের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের রিপোর্টে, "২০ জুন থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত, হিমাচল প্রদেশে মোট ১১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৮ জনের মৃত্যু দুর্যোগজনিত এবং চলমান বর্ষা মরসুমে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।" বৃষ্টিপাতজনিত মৃত্যুর মধ্যে, আকস্মিক বন্যায় ১৪ জন, মেঘ ভাঙা বৃষ্টির কারণে ১৪ জন, ডুবে ১২ জন, ভূমিধসে একজন এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৫ জন নিহত হয়েছেন।

মান্ডি জেলায় বৃষ্টিপাতজনিত মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ১৬ জন, কাংড়া জেলায় ১৬ জন এবং কুল্লু জেলায় ৭ জন মারা গেছেন। ইতিমধ্যে, সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে সোলানে (৮), কুল্লুতে (৭), চাম্বায় (৬) এবং শিমলায় (৪) যানবাহন দুর্ঘটনায় মৃত্যুর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। এসডিএমএ এই মৃত্যুর অনেকগুলির সঙ্গে সড়কের খারাপ অবস্থা, দৃশ্যমানতা কম থাকা এবং ভারী বৃষ্টিপাতের সময় খারাপ ঢালের সম্পর্ককে যুক্ত করেছে। মর্মান্তিক প্রাণহানির পাশাপাশি, রিপোর্টে জনসাধারণের পরিকাঠামো, ঘরবাড়ি, গবাদি পশু এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতির তালিকাও রয়েছে। রাজ্যজুড়ে বর্ষাকালীন দুর্যোগের কারণে মোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১,২৩,০০০ লক্ষ টাকার (১,২৩০ কোটি টাকা) বেশি বলে অনুমান করা হচ্ছে।

প্রশাসনের তরফে ভ্রমণকারী এবং বাসিন্দাদের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে এবং পরামর্শ মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেছে। এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, হোমগার্ড এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় উদ্ধার ও পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।