শিমলা : এই বর্ষার বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির যেন সীমা নেই হিমাচল প্রদেশে। দুই মাসে ক্ষতির পরিমাণ ৮  হাজার ১০০ কোটি টাকার। এপ্রসঙ্গে এর আগে হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু জানিয়েছিলেন, ধ্বংসলীলা থেকে রাজ্যকে পুনরায় গুছিতে তুলতে লেগে যাবে একটা বছর।


এবার জুনের ২৪ তারিখে পাহাড়ি এই রাজ্যে বর্ষা আগমনের কথা জানায় আবহাওয়া দফতর। ভারী বর্ষণ, মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে শুরু হয় ধস, বন্যা। তাতে একাধিক পরিকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। তার জেরে, সরকার গোটা রাজ্যকে 'প্রাকৃতিক-বিপর্যয়ে' ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা বলে ঘোষণা করে। পাশাপাশি কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানায়, ২০০৫ বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করার।


হিমাচল প্রদেশ সরকারের তথ্য অনুয়ায়ী, বর্ষার বৃষ্টিতে ৮০৯৯.৪৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪৬। তবে, আরও ৩৮ জন নিখোঁজ। বৃষ্টি-সংক্রান্ত একাধিক ঘটনায় ৩৩১ জন আহত।


বৃষ্টি-বিধ্বস্ত এই রাজ্যে হাজার হাজার মানুষের রুটিরুজি নষ্টের পথে। বহু মানুষের ব্যবসাপত্র শিকেয় উঠেছে। এই রাজ্যের অর্থনীতির অন্যতম ভিত পর্যটন ও আপেল। সেখানেও আঘাত করেছে বৃষ্টি-বিপর্যয়। একসময় এখানে যে ট্যাক্সি চালক দিনে ২ হাজার টাকা করে রোজগার করতেন, সেখানে এখন তাঁদের দৈনিক আয় নেমে এসেছে ২০০ টাকায়।


সরকারি তরফে দাবি করা হয়েছে, হাজারো হাজারো বাসস্থান তছনছ হয়ে গিয়েছে। বিপুল পরিমাণ শস্য ও খেত নষ্ট হয়েছে। ভারতীয় বায়ুসেনা, সেনা, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, পুলিশ, হোমগার্ড, দমকলকর্মী এবং স্থানীয় ভলান্টিয়ারদের সাহায্য়ে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করতে হয়েছে। জাতীয় সড়ক থেকে শুরু করে রাজ্য, জেলা এবং স্থানীয় স্তরে রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বহু সেতু হয় ধুয়েমুছে সাফ বা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত যে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এই বিপর্যয়ের জেরে গোটা রাজ্যকে এমন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে যাতে কি না দৈনিক জীবনযাপন ধাক্কা খেয়েছে, জানিয়েছে রাজ্য সরকার। পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে গোটা রাজ্যকেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত এলাকা বলে ঘোষণা করে সরকার। 


এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের তরফে ২০০ কোটি টাকা সাহায্যের ঘোষণা করা হয়েছে। হিমাচলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে কর্ণাটক ও রাজস্থান সরকারও। উভয় সরকারের তরফে ১৫ কোটি টাকা করে সাহায্য করা হয়েছে। ছত্তীসগঢ় সরকারও দিয়েছে ১১ কোটি টাকা। মঙ্গলবার এম কে স্টালিন নেতৃত্বাধীন তামিলনাড়ু সরকারও ১০ কোটির আর্থিক সহায়তার কথা জানিয়েছে।