হংকং : দাউ দাউ করে জ্বলছে পরপর সাতটি বহু তল। গনগনে আগুন আর কালো ধোঁয়া গ্রাস করেছে গোটা এলাকা। গত কয়েকদিন ধরে শিরদাঁড়ায় শীতল স্রোত বইয়ে দিয়েছে হংকঙের সাত বহুতল আবাসনে অগ্নিকাণ্ডের একাধিক ভিডিও। ইতিমধ্যেই সেই ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে পৌঁছেছে ১২৮-এ। এখনও নিখোঁজ অনেকে। হয়ত তাদের অনেকেরই নাম যুক্ত হতে পারে এই তালিকায়। কিন্তু ঠিক কারণে একটা উন্নত, সচেতন শহরে এত বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটে গেল? এখনও উত্তর দেয়নি প্রশাসন বা অন্য কেউই। কিন্তু এই ভয়ঙ্কর আগুন শুরুর ঠিক আগের এমন একটি ভিডিও সামনে এসেছে, যা নিয়ে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য ! প্রশ্ন উঠছে এক নির্মাণকর্মীর ধূমপানই কি এতগুলো মানুষের জীবন্ত পুড়ে মরার কারণ হল?
উত্তর তাই পো জেলার ওয়াং ফুক হাউসিং কমপ্লেক্সে আটটি বহুতল রয়েছে। তার মধ্যে সাতটিই ভস্মীভত। দেখা গিয়েছে ওই বাড়িগুলিতে মেরামতির কাজ চলছিল, তাই বাঁশের ভারা বাঁধা ছিল, ঝুলছিল প্লাস্টিক শিটও। তাই আগুন ছড়িয়ে যায় দ্রুত। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হংকংয়ের পাহাড়ি নিউ টেরিটরিজের তাই পোর এই অগ্নিকাণ্ড কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। তাতে মারা গিয়েছেন কমপক্ষে ১২৮। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। তাতে দাবি করা হয়েছে,একজনের সিগারেট থেকেই এতবড় আগুনের সূত্রপাত ঘটে থাকতে পারে। তারপর আর থামানো যায়নি আগুন। মেরামতির কাজে ব্যবহৃত বাঁশের ভারা, দাহ্য জিনিস দিয়ে তৈরি সেফটি-নেট, প্লাস্টিকের মতো দাহ্য দিনিসে আগুন ধরে যায়।
আরটি ইন্ডিয়ার পোস্ট করা একটি ক্লিপে দেখা গিয়েছে, হংকংয়ের ওয়াং ফু কোর্টে আগুন লাগার ঠিক কয়েক মুহূর্ত আগে বাইরের দেয়ালের কাছে এক শ্রমিক বসে ধূমপান করছেন । নেটিজেনদের সন্দেহ, এই সিগারেটের আগুন থেকেই দাহ্য কিছুতে আগুন লেগে থাকতে পারে, যা পরে বিধ্বংসী হয়ে ওঠে। শুক্রবারই এতবড় বিপর্যয়ের জন্য সংস্কার প্রকল্পের সাথে যুক্ত আটজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও ভাবে ওই বাড়ির সংস্কার প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
বুধবার থেকে টানা দু’দিন ধরে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়। শুক্রবার প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, ওই বহুতলগুলির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে দগ্ধ বহুতলগুলিতে অনেকের আটকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কত জন সেই সংখ্যাটা তাই নিয়ে ধন্দ রয়েছে।