নয়াদিল্লি: মাঝ সমুদ্রে রুদ্ধশ্বাস অভিযান চালিয়ে জাহাজ ছিনতাই। সেই নিয়ে সরগরম আন্তর্জাতিক মহল। তার মধ্যেই ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে জাহাজ ছিনতাইয়ের রোমহর্ষক মুহূর্ত সকলের সামনে তুলে ধরল ইয়েমেনের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন 'হুথি'। মালবাহী জাহাজটি ইজরায়েলের বলেই দাবি তাদের। যদিও ইজরায়েল এখনও পর্যন্ত সেই দাবিতে সিলমোহর দেয়নি। বরং জাহাজটিও তাদের নয়, জাহাজে কোনও ইজরায়েলি নাগরিকও নেই বলে দাবি করছে তারা। (Cargo Ship Hijack)
রবিবার লোহিত সাগরে 'গ্যালাক্সি লিডার' নামক ওই জাহাজটি ছিনতাই করে 'হুথি'। তুরস্ক থেকে সেটি ভারত আসছিল। এবার ছিনতাইয়ের সেই মুহূর্তের ভিডিও বলেই একটি দু'মিনিটের ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছে 'হুথি'। ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। তবে ওই ভিডিও-টি ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। (Yemeni Houthi Ship Hijack)
ওই ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে, হেলিকপ্টারে চেপে জাহাজটিকে অনুসরণ করা হয় প্রথমে। তার পর একে একে লাফিয়ে পাটাতনের উপর নামছেন 'হুথি'র সদস্যরা। তাঁদের প্রত্যেকের হাতেই রয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র, মুখ ঢাকা কালো মুখোশে।আচমকাই ধ্বনি দিতে শুরু করেন তাঁরা, সেই সঙ্গে চালাতে শুরু করেন গুলিও। তার পর একে একে জাহাজের হুইলহাউস এবং কন্ট্রোল রুমের দখল নেন বন্দুকধারীরা।
ভিডিও-তে জাহাজের বেশ কয়েক জন কর্মীকেও দেখা গিয়েছে ভিডিও-তে। হতচকিত অবস্থায় কার্যত মূক ও বধির হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। মাথার উপর হাত তুলে দাঁডিয়ে রয়েছেন। তাঁদের সেই অবস্থায় রেখে বন্দুকধারীদের কয়েক জন এদিক ওদিক দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। এলোপাথাড়ি গুলিও ছুড়ছেন। লোহিত সাগর থেকে জাহাজটিকে ঘুরিয়ে ইয়েমেন নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর। হোদেইদা প্রদেশের সালিফ বন্দরে নোঙর করা হয়েছে। ইজরায়েলের দাবি, এর নেপথ্যে ইরানের মদত রয়েছে।
'হুথি'-র মুখপাত্র মহম্মদ আব্দুল-সালাম জানিয়েছেন, জাহাজ ছিনতাই সবে সূচনা। গাজায় ইজরায়েলি হানা বন্ধ না হলে, সমুদ্রপথে আরও এমন হামলা চালানো হবে। জাহাজটি তাদের নয় বলে যদিও দাবি করেছে ইজরায়েল সরকার, কিন্তু দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, জাহাজটিতে বাহামার পতাকা লাগানো ছিল। রেজিস্ট্রেশন নম্বর একটি ব্রিটিশ সংস্থার। কিন্তু ওই ব্রিটিশ সংস্থায় অংশীদারিত্ব রয়েছে ইজরায়েলের শিল্পপতি আব্রাহ্যাম উঙ্গারের, যিনি রামি নামেও পরিচিত। জাপানের সংস্থাকে জাহাজটির ইজারা দেওয়া হয়েছিল। ছিনতাইয়ের সময় জাহাজে যে ২৫ জন কর্মী ছিলেন, তাঁরা ইউক্রেন, বুলগেরিয়াস ফিলিপিনো এবং মেক্সিকোর নাগরিক বলে জানা গিয়েছে।