কলকাতা: বাড়ি কেনার পরেই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হল গাড়ি কেনা। কিন্তু করোনার আবহে এই গাড়ি বাজারও আর আগের মত থাকবে না বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ক্রেতাদের স্বভাবগত পরিবর্তন হতে পারে, তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে গাড়িবাজারকে। এমনকী লকডাউনের আগেও করোনার আতঙ্ক ও সোশ্যাল ডিসট্য়ান্সিংয়ের কারণে গাড়ি ডিলারদের কাছে ইচ্ছুক ক্রেতাদের ভিড় বহুলাংশে কমে যায়। ফলে গাড়ি নির্মাতারা নতুন স্ট্র্যাটেজি নিচ্ছেন, এবার পুরোটাই অনলাইনে করার কথা ভাবছেন তাঁরা।


এর ফলে ক্রেতাদের আর গাড়ি কিনতে ডিলারের কাছে যেতে হবে না। সবই হবে ডিজিটালে। মডেল পছন্দ করা থেকে আপনার পছন্দসই কনফিগারেশন, ফিনান্সিয়াল স্কিম- সব কিছু অনলাইনেই করতে পারবেন। আপনাকে সাহায্য করার জন্য সেলস কর্মীরাও থাকবেন। এমনকী অনলাইনেই হয়ে যাবে টেস্ট ড্রাইভ। ডিলারের কাছে যেতেও হবে না, গাড়ি চলে আসবে আপনার দুয়ারে।

প্রথম হুন্ডাই চালু করে এই ক্লিক টু বাই স্কিম। প্রথমে দিল্লি-এনসিআরে আর এখন গোটা দেশে ডিলারদের সঙ্গে বোঝাপড়ার মাধ্যমে এই প্রকল্প চালু করেছে তারা। টাটা মোটর্সও একই পথে হেঁটেছে। অর্থাৎ সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংও হল আবার কিনে ফেলা হল পছন্দসই গাড়িও। যদিও গাড়ি কেনা মোবাইল কেনার মত সোজা নয়, যে ঝপ করে অনলাইনে কিনে ফেলা যাবে। অনেকের কাছেই গাড়ি কেনার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল পছন্দসই মডেল আগে ছুঁয়ে দেখা। তাই ডিলারশিপ তুলে দেওয়া হচ্ছে না, তবে ডিলারের কাছে আপনার যাওয়ার সংখ্যা ভালরকম কমে যাবে।



তবে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, করোনা পরবর্তী সময়ে গাড়ির চাহিদা কেমন থাকবে। বাজারে এখন চূড়ান্ত মন্দা, গাড়ি বিক্রি কার্যত থেমে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে করোনা সঙ্কট কেটে গেলেও ক্রেতারা গাড়ি কিনতে কতটা উৎসাহী হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যদিও কোনও কোনও গাড়ি বিক্রেতা মনে করছেন, সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং পালনের জন্যই ব্যক্তিগতভাবে গাড়ি কেনার ঝোঁক বাড়তে পারে। তাই ট্যাক্সি চড়ার থেকে অনেকেই হয়তো গাড়ি  কেনার কথা ভাববেন।

অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত কম দামের ছোট গাড়ির বিক্রি বাড়তে পারে, বিশেষ করে উৎসাহী হতে পারেন তাঁরা, যাঁরা প্রথমবার গাড়ি কিনতে চলেছেন। অতএব এন্ট্রি লেভেল ছোট গাড়ির চাহিদা এখন হু হু করে কমলেও করোনা সঙ্কট কেটে গেলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারে। তবে প্রযুক্তির আধুনিকীকরণ কখনও এক জায়গায় থেমে থাকে না, গাড়ি ডিলারশিপের ধরনেও পরিবর্তন আসতে পারে। শহরের দিকে ডিজিটাল কেনাবেচা বাড়বে, ডিলারশিপের আকার কমবে, কমে যাবে গাড়ির জন্য জায়গাও। ফলে এক জায়গায় কোনও সংস্থার সব গাড়ি দেখার সুযোগ সম্ভবত আর মিলবে না।