কাবুল: রবিবার তালিবান জঙ্গিরা কাবুল দখল করতেই শুরু হয় পালানোর হিড়িক। খোদ দেশ ছেড়ে তাজিকিস্তানের পথে পালান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘনি। মার্কিন সেনা আফগানিস্তান ছাড়তেই আগ্রাসী রূপ নিয়েছে জঙ্গিরা। মাত্র এক সপ্তাহেই পুরো দেশ দখল করে নিয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা। প্রশ্ন জাগে, এই বিশাল অস্ত্র ভাণ্ডারের অর্থ কে জোগাচ্ছে জঙ্গিদের; ঠিক কতটা ধনী তালিবান ? 


বিশ্ব সন্ত্রাসের মানচিত্র বলছে, ২০১৬ সালে আমেরিকার বিজনেস ম্যাগাজিন 'ফোর্বস'-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, 'টেরর ফান্ডিং' বা জঙ্গিদের তহবিলের নিরিখে সবার ওপরে নাম রয়েছে ইসলামিক স্টেট (ISIS)-এর। সেই সময় ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের টার্ন ওভার ছিল এই জঙ্গি গোষ্ঠীর। পঞ্চম স্থানে নাম ছিল তালিবানের। তাদের বার্ষিক আয় ছিল ৪০ কোটি মার্কিন ডলার। এই পরিসংখ্যান বুঝিয়ে দেয় কতটা আর্থিকভাবে শক্ত জমির ওপর রয়েছে তালিবান।


ফোর্বসের মতে, তালিবানের এই টাকার উৎস আসলে মাদক পাচার, তোলাবাজি ও চাঁদা। জোর করে যা আদায় করত জঙ্গিরা। NATO রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯-২০ সালে তালিবানের বার্ষিক বাজেট ছিল ১.৬ বিলিয়ন। ন্যাটোর এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনে Radio Free Europe/Radio Liberty।


প্রশ্ন ওঠে, কোথা থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা এসেছে তালিবানের হাতে। রিপোর্ট বলছে, ৪৬.৪ কোটি মার্কিন ডলার তোলা হয়েছে খনির সেক্টর থেকে। ভয় দেখিয়ে তোলা হয়েছে এই টাকা। মাদক পাচার করে ৪১.৬ কোটি মার্কিন ডলার পেয়েছে জঙ্গিরা। বিদেশের চাঁদা থেকে এসেছে ২৪ কোটি মার্কিন ডলার। রিপোর্ট বলছে, এ ছাড়াও অপহরণ তোলাবাজি থেকে ১৬ কোটি মার্কিন ডলার তুলেছে তালিবান জঙ্গি গোষ্ঠী। রিয়েল এস্টেট থেকে এসেছে ৮ কোটি মার্কিন ডলার। ন্যাটোর রিপোর্টে বলা হয়েছে, তালিবান জঙ্গিরা নিজস্ব রাজনৈতিক ও মিলিটারি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতেই এই বিশাল তহবিল জোগাড় করছিল।


রবিবার রাতেই আফগানিস্তান দখলের দাবি করে তালিবানরা। যার পর থেকে দেশজুড়ে তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত দেশ ছেড়ে পালানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে আফগানিস্তানের বহু বাসিন্দা। সোমবার সকাল থেকেই কাবুল বিমানবন্দরে একাধিক হৃদয়বিদারক দৃশ্য সামনে এসেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, বিমানের টারম্যাকে কার্যত লাফিয়ে ওঠার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন আফগান যুবকরা।