নয়াদিল্লি: করোনাকালে মানবিকতার নজির। হায়দরাবাদে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত শিশুর পরিবারের পাশে দাঁড়াল গোটা দেশ। বাঁচল প্রাণ। চিকিত্‍সকরা জানিয়েছিলেন, স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাট্রোফি নামে একটি দুরারোগ্য অসুখে ভুগছিল শিশুটি। যা ১০ হাজার জনের মধ্যে একজনের হয়। এর চিকিত্‍সাও প্রচুর ব্যয়বহুল। দরকার পৃথিবীর সবথেকে দামি ওষুধ, যার দাম প্রায় ১৬ কোটি টাকা। তাও আবার ভারতে পাওয়া যায় না। আনতে হবে সুদূর আমেরিকা থেকে।


প্রায় এক বছর বয়স হতে চলল অথচ না পারছে একা বসতে, না পারছে হামাগুড়ি। কোনও ব্যালেন্সই নেই শরীরে। সন্তানের এই অবস্থা দেখে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন বাবা, মা। জানা যায়, স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাট্রোফি ভুগছে একরত্তি। বহুমূল্য ওষুধ জোলজেন্সমা প্রয়োগই এই রোগ থেকে মুক্তির উপায়। ইন্ট্রাভেনাস জোলজেন্সমা ইঞ্জেকশনের সিঙ্গল ডোজের মাধ্যমে জিন থেরাপি করা হয়। কিন্তু, কীভাবে জোগাড় হবে অত টাকা? করোনা আবহের মধ্যে কীভাবেই বা সুদূর আমেরিকা থেকে আসবে সেই ওষুধ? অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও হাল ছাড়েননি বাবা-মা। সোশাল মিডিয়া থেকে দরজায় দরজায় গিয়ে চাঁদা তুলে ছেলের চিকিত্‍সার টাকা সংগ্রহ করেন তাঁরা। শেষপর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে সুস্থ হয়ে উঠল ছোট্ট শিশু।


জানা গিয়েছে, হায়দরাবাদের বাসিন্দা ওই শিশুর নাম আয়াংশ। বাবা যোগেশ গুপ্ত বেসরকারি সংস্থার কর্মী। কিন্তু এত টাকা ওই পরিবারের পক্ষে জোগাড় করা ছিল কার্যত অসম্ভব। সোশ্যাল মিডিয়ার দ্বারস্থ হয় পরিবার। শেষমেশ চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করে ওই ওষুধের বরাত দেওয়া হয়। গত ৮ জুন আমেরিকা থেকে সেকেন্দ্রাবাদের রেনবো চিল্ড্রেন্স হাসপাতালে পৌঁছয় ওই ওষুধ। এরপর বুধবার আটটি ভায়াল থেকে ৬০ মিলিলিটার ওষুধ দেওয়া হয় ওই শিশুকে। ডা. রমেশ কোনাঙ্কির তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে ওই শিশুর।  


তবে করোনা আবহে আয়াংশের বিশেষ যত্ন নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন চিকিৎসক।  তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে প্রায় ৮০০ শিশু এই রোগে আক্রান্ত। উল্লেখ্য এর আগে রেনবো চিল্ড্রেন্স হাসপাতালে গত বছর অগাস্টে এবং চলতি বছর এপ্রিল মাসে ইন্ট্রাভেনাস জোলজেন্সমা ইঞ্জেকশনের প্রয়োগের ফলে স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাট্রোফি থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে দুই শিশু।