হায়দরাবাদ : মর্মান্তিক ! ১৩ ও ১০ বছরের সন্তানকে খুন করে আত্মহত্যা করলেন এক দম্পতি। অন্তত দেহ উদ্ধারের পর প্রাথমিক তদন্তে সেরকমই অনুমান করছে পুলিশ। হায়দরাবাদের এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গেছে।


একটি নোট উদ্ধার হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। সেখানে ওই দম্পতি তেলুগু ভাষায় লিখে গেছেন, "নিজের জীবন শেষ করে দেওয়া ছাড়া আমার কাছে আর কোনও পথ খোলা ছিল না। আমায় ক্ষমা করে দিন। আমি আমার কেরিয়ার নিয়ে অনেক কষ্ট করছিলাম। শারীরিক ও মানসিকভাবে ভুগছিলাম। আমি ডায়াবেটিস, নার্ভ ও কিডনির রোগে ভুগছিলাম।"


সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভ সূত্রের খবর, মৃত দম্পতির নাম চন্দ্রশেখর রেড্ডি (৪৪) ও কবিতা (৩৫)। ২০২৩ সাল থেকে বেকার ছিলেন রেড্ডি। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, এর আগে একটি বেসরকারি কলেজে জুনিয়র লেকচারার হিসাবে কাজ করেছেন চন্দ্রশেখর। 


এখন তাঁদের আর্থিক কষ্ট চলছিল। কোনও আশাও দেখতে পাচ্ছিলেন না। এই পরিস্থিতিতে চন্দ্রশেখর ও কবিতা সবথেকে নিষ্ঠুর সিদ্ধান্ত নেন। নিজেদের সন্তানদের হত্যা করে, নিজেরা আত্মহত্যা করেন। এমনই বলছে পুলিশ।


১০০ ইমার্জেন্সি কলে পুলিশের কাছে খবর আসে। সোমবার রাতেই শহরের হাবসিগুড়ার বাড়ি থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার হয়। আলাদা আলাদা ঘরে দেহ পড়েছিল চন্দ্রশেখর ও কবিতার। অন্যদিকে, সন্তানদের দেহ পড়েছিল তাদের নিজ নিজ ঘরে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই দম্পতি প্রথমে তাঁদের ১০ বছরের পুত্র বিশ্বন রেড্ডি ও ১৩ বছরের কন্যা শ্রীতা রেড্ডিকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। পরে নিজেরা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বিশ্বন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল, অন্যদিকে শ্রীতা ছিল নবম শ্রেণির ছাত্রী।  


চন্দ্রশেখর ও কবিতা তেলাঙ্গানার কালওয়াকুর্তির বাসিন্দা ছিলেন। উভয়েরই হায়দরাবাদে পরিবার রয়েছে। তাঁদের এবং তাঁদের সন্তানদের এই মৃত্যু দেশজুড়ে কোটি কোটি জনসংখ্যার জীবন সংগ্রামকে সামনে নিয়ে এসেছে আরও একবার। আজও দেশের বহু মানুষ দু'বেলার রুজি-রোজগারের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। দীর্ঘদিন বেকার থাকার ফলে অনেকের শারীরিক ও মানসিক চাপ অসহ্য হয়ে ওঠে। যার জেরে এই চরম সিদ্ধান্ত। একইরকম ভাবে দীর্ঘদিন ধরে রোজগার না থাকায় সমস্যায় পড়েছিলেন চন্দ্রশেখরও। যার জেরে এই চরম সিদ্ধান্ত নেন তিনি। 


আরও পড়ুন ; 'অভিযোগ করার মতো কোনও পুরুষ বাঁচবে না', স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আত্মহত্যা; তার আগে ভিডিও বার্তা !