এই রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে ওড়িশা হাইকোর্টের দুটি রায় খারিজ করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ওড়িশা হাইকোর্ট তার রায়ে জানিয়েছিল ব্যাঙ্ক যেন ওই প্রার্থীকে চাকরিতে বহাল রাখে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের যুক্তি, কোনও ব্যক্তি যদি তথ্য গোপন করে যায় অথবা অসত্য তথ্য দেয়, তাহলে সে চাকরিতে বহাল থাকার দাবি জানাতে পারে না।
বিচারপতি অশোক কুমার ভূষণ, বিচারপতি আর সুভাষ রেড্ডি ও বিচারপতি এম আর শাহ রায় দিতে গিয়ে বলেন, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাদের বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল আবেদনকারী গ্র্যাজুয়েট হওয়া চলবে না। আদালত বলেছে, ওই আবেদনকারী বিজ্ঞাপনকে চ্যালেঞ্জ জানাননি। নিজের যোগ্যতা গোপন করে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন। এরই ভিত্তিতে দেশের শীর্ষ আদালত বলেছে, আবেদনকারী ভেবেচিন্তে, ইচ্ছাকৃতভাবে, স্বেচ্ছায় তাঁর যোগ্যতার তথ্য গোপন করেছেন। আবেদনকারীকে অনুমতি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে হাইকোর্ট ভুল করেছে।
আগের একটি রায় তুলে ধরে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, তথ্য গোপন করে যাওয়া বা অসত্য তথ্য দেওয়া চাকরিজীবীর বা আবেদনকারী বা কর্মচারীর স্বভাবের নীতিগত দিকটি তুলে ধরে। এই রায় দিতে গিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, একজন কর্মচারী নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেবেন, এটাই কাম্য। কিন্তু রিট পিটিশনার তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এবং বাস্তবে তিনি বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন। ফলে এই চাকরিতে আবেদন করার যোগ্য তিনি নন।
আদালত আরও বলেছে, অমিত কুমার দাসের এহেন আচরণে সত্যই চাকরি দরকার, এমন একজন বঞ্চিত হলেন।
যদিও অমিত কুমার দাস সুপ্রিম কোর্টের ২০০০ সালের একটি রায় তুলে ধরে আবেদন করেছিলেন, অধিক যোগ্যতা, কোনও কম যোগ্যতার পদে বহাল থাকা ব্যক্তিকে বরখাস্ত করার ভিত্তি হতে পারে না। ওড়িশা হাইকোর্টের রায়কে তিনি তুলে ধরেন।
কিন্তু শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, পঞ্জাব ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিল, পিওন পদে আবেদনকারীকে দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ বা সমতুল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি তারিখ পর্যন্ত গ্র্যাজুয়েট হওয়া চলবে না। ফলে কোনও গ্র্যাজুয়েট প্রার্থী এই পদে আবদেন করতে পারবেন না, এটা স্পষ্টভাবে বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা ছিল।
তা সত্ত্বেও অমিত কুমার দাস নিজের যোগ্যতার কথা চেপে রেখে আবেদন করেছেন। ফলে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাঁর প্রার্থীপদ বাতিল করে এবং তাঁকে নীচের পদে যোগ দিতে না দিয়ে সঠিক পদক্ষেপ করেছেন।