নয়াদিল্লি: 'গার্গল আরটিপিসিআরে করোনা পরীক্ষার পদ্ধতি অবিলম্বে চালু করুন'। কেন্দ্রের কাছে এমনটাই আবেদন জানালেন এইমসের এক চিকিৎসক। কিছুদিন আগেই পুণের একটি সংস্থার তৈরি করোনা পরীক্ষা করার এই কিটটিকে অনুমোদন দেয় আইসিএমআর। এর ফলে খুব সহজেই করোনা পরীক্ষার ফল জানা সম্ভব হবে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সেই পদ্ধতি অবিলম্বে শুরু করতে বলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে চিঠি লিখলেন চিকিৎসক।


নয়া এই পদ্ধতির আবিষ্কারক নাগপুরের এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর একদল বিজ্ঞানী। স্বাস্থ্য মন্ত্রককে পাঠানো সেই চিঠিতে ডাঃ আমানদীপ লিখেছেন,এক বছর আগেই এই গবেষমণা হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই একাধিক ইনস্টিটিউট দ্বারা এই পদ্ধতি অনুমোদন পেয়েছে। কাজেই করোনা পরীক্ষার জন্য এই পদ্ধতি চালু করা হোক। তিনি আরও লিখেছেন, বিজ্ঞানীদের কাজ প্রশংসনীয়। তবে সমস্যার বিষয় এই যে, ইয়ং প্রজন্মের কাজ কেউ নজরেই আনছে না।'


এইমসের সহ সভাপতি অমিত মালব্য জানিয়েছেন, 'অনেকেই আরটিপিসিআর পরীক্ষা করাতে ভয় পান। আমরা তাই এই নয়া পদ্ধতি ভেবেছি। ২০ জন এই পদ্ধতিতে পরীক্ষাও করেছে এবং দেখা গিয়েছে তাঁদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট সিটি ভ্যালুর সঙ্গে সমান থেকে। গতবছর ১০ জুলাই এই গবেষণার পেপারটি প্রকাশিত হয়েছিল।গবেষণা যদি কাজে লাগানো যায়, সে ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষার খরচ অনেকটাই কমে যাবে।' পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, এর ফলে স্বাস্থ্যকর্মীদে নমুনা সংগ্রহের বিষয়টিও সহজ হয়ে যাবে। 


কিন্তু কী এই গার্গেল পদ্ধতি। বিজ্ঞানীরা স্যালাইন জল দিয়ে বাড়িতে বসেই করা যাবে করোনার আরটিপিসিআর পরীক্ষা। এতে কোনও প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর প্রয়োজন পড়ে না। বর্তমান পদ্ধতিতে নাক এবং গলা থেকে নমুনা সংগ্রহের সময়ে অনেকেরই সমস্যা হয়। নয়া পদ্ধতিতে যার দরকার পড়বে না। গার্গল করা স্যালাইন জল থেকেই তিন ঘণ্টার মধ্যে বাড়িতেই কোভিড রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব হবে।


এই পদ্ধতিতে যে কেউ নমুন সংগ্রহ করতে পারেন। প্রথমে স্যালাইন আরটিপিসিআর টেস্টের কিট কিনতে হবে। কিটেই স্যালাইন ওয়াটার এবং টেস্ট টিউব দেওয়া থাকবে। ওই টিউবের ভিতর রাখা থাকবে স্যালাইন জল। ওই জল মুখে নিয়ে ১৫ সেকেন্ড ধরে গার্গল করতে হবে। তারপর মুখের ভেতরের ওই জল টিউবেই ভরে দিতে হবে। নমুনা সংগ্রহ করতে হবে এই ভাবেই। 


ওই নমুনা এ বার ল্যাবে নিয়ে গিয়ে অন্য আরেকটি বাফার সলিউশনের সঙ্গে মিশিয়ে ঘরের তাপমাত্রায় আধ ঘণ্টা মতো রেখে দিতে হবে। তারপর ওই তরল নমুনাটি ৯৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৬ মিনিট ফোটালেই তা থেকে আরএনএ পাওয়া যাবে। এই আরএনএ থেকে সহজেই জানা যাবে, ব্যক্তি করোনা‌ আক্রান্ত হয়েছেন কি না।