নয়াদিল্লি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর এ দেশের কৃষক আন্দোলন, বিক্ষোভ নিয়ে মন্তব্যে গভীর অসন্তোষ জানাল ভারত সরকার। পঞ্জাব, হরিয়ানা সহ উত্তর ভারতের কৃষকরা সংসদে পাশ হওয়া তিনটি কৃষিবিল প্রত্যাহারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। ট্রুডো তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, অটোয়ার তরফে উদ্বেগের বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে। এজন্য় তাঁকে ‘অপরিণত রাজনীতিক’ আখ্যা দিয়ে দেশের প্রাক্তন বিদেশসচিব কানওয়াল সিবল ট্রুডো ভারতের ঘরোয়া বিষয়ে নাক গলিয়ে পঞ্জাবে অশান্তির আগুন ছড়াতে চাইছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন, বলেছেন, সরকার তাঁকে তিরস্কার করুক।
কানাডার এমপি বারদিস ছাগ্গার গুরু নানকের ৫৫১-তম জন্মদিবস বা গুরুপরব উদযাপনে যে ভিডিও কনফারেন্স করেছেন, সেখানেই ট্রুডো বলেন, ভারত থেকে পাওয়া কৃষক আন্দোলনের কথাও উল্লেখ করে শুরুটা না করলে ঠিক হবে না। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, আমরা সকলেই পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে খুবই চিন্তিত। আমি জানি, আপনাদের অনেকের কাছেই এটা বাস্তব। আমায় মনে করাতে দিন, কানাডা সবসময় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের পক্ষে দাঁড়াবে। আমরা আলাপ-আলোচনার গুরুত্বে বিশ্বাস করি, সেজন্যই আমাদের উদ্বেগ জানাতে একাধিক সূত্র মারফত সরাসরি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। অনুষ্ঠানে কানাডার দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত মন্ত্রী নবদীপ বাইনস, হরজিত সজ্জন ও শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।
সম্ভবত, ট্রুডোই প্রথম বিশ্বের কোনও নেতা যিনি ভারতীয় কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন।
কিন্তু ট্রুডোর বক্তব্যে তীব্র আপত্তি প্রকাশ করে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলেছেন, ভারতের চাষিদের নিয়ে কানাডার নেতাদের কিছু সঠিক ভাবে অবহিত না হয়ে করা মন্তব্য আমরা দেখেছি। এধরনের কথাবার্তা অবাঞ্ছিত, বিশেষত, একটি গণতান্ত্রিক দেশের ঘরোয়া বিষয় নিয়ে। বিদেশমন্ত্রক ওই মন্তব্য খারিজ করে দিয়েছে। শ্রীবাস্তব আরও বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশে কূটনৈতিক কথাবার্তার অপব্যবহার না হওয়ায়ই সবচেয়ে বাঞ্ছনীয়।
কোভিড-১৯ অতিমারীর উল্লেখ করেও ট্রুডো বলেন,এটা আমাদের সবার সামনে একযোগে সক্রিয় হওয়ার যথাযথ সময়। আমরা পরস্পরকে সাহায্য করতেই চাই। সেজন্যই একযোগে কাজ চালিয়ে যেতে তৈরি।

গুরু নানকের সমবেদনা, সহানুভূতি, নিঃস্বার্থ সেবার শিক্ষা মনে রাখা জরুরি বলেও অভিমত জানান ট্রুডো। দাবি করেন, শিখ ধর্ম ও কানাডার মূল্যবোধের মূল কথা এটাই।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দিল্লিতে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার শিখের আন্দোলন মঙ্গলবার ষষ্ঠ দিনে পড়ল। কৃষিপণ্য লেনদেনের বাজার, দরজা খুলে দেওয়া হবে নতুন আইনে, এতে তাদের ক্ষতি হবে বলে দাবি চাষিদের। তিনটি নতুন আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় কৃষক সংগঠনগুলি। চাষিদের বক্তব্য, কেন্দ্রের আইনে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ব্যবস্থা বাতিল হয়ে যাবে, তাদের বড় কর্পোরেটদের দয়ায় থাকতে হবে।