নয়াদিল্লি: লাদাখে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র সীমানা পেরিয়ে ভারতের জমিতে ঢুকে পড়ার মোকাবিলায় সামরিক কায়দায় জবাব দেওয়ার রাস্তা খোলা রয়েছে বলে জানালেন বিপিন রাওয়াত। তবে দুটি দেশের সেনাবাহিনীর যাবতীয় আলোচনা ও কূটনৈতিক পথে সমাধানের চেষ্টা ব্য়র্থ হলেই সামরিক রাস্তায় এগনোর কথা ভারত ভাববে বলেও জানিয়েছেন দেশের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস)। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, এ ধরনের যে কোনও কার্যকলাপ শান্তিপূর্ণ কায়দায় মিটিয়ে অনুপ্রবেশ, আগ্রাসন রোধেই গোটা সরকারি দিশা ঠিক হয়। প্রতিরক্ষা বাহিনীর শাখাগুলি সবসময়ই সামরিক অভিযানের জন্য তৈরি থাকে যদি না প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর স্থিতাবস্থা ফেরানোর যাবতীয় প্রয়াস সফল হয়।
লাদাখে স্থিতাবস্থা পুনরুদ্ধারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল সমস্ত পন্থাই খতিয়ে দেখছেন বলেও জানান তিনি। ভারত ও চিন গত আড়াই মাসে বেশ কয়েক দফায় সামরিক ও কূটনৈতিক আলোচনা করেছে, কিন্তু পূর্ব লাদাখে সীমান্ত বিরোধ নিরসনে কোনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। গত বৃহস্পতিবার দুপক্ষ আরও এক দফা কূটনৈতিক বৈঠক করে। তারপর বিদেশমন্ত্রক জানায়, ঠিক হয়েছে দুপক্ষ দ্রুততার সঙ্গে, চলতি চুক্তি-বোঝাপড়া, প্রটোকল মেনে সব বকেয়া ইস্যু মিটিয়ে ফেলতে সম্মত হয়েছে। তবে সূ্ত্রের খবর, বৈঠকে তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায়নি। পূর্ব লাদাখে উত্তেজনার পারদ কমানোর পদ্ধতি নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শদাতা অজিত ডোভাল ও চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র মধ্যে প্রায় ২ ঘন্টা আলোচনার পরদিন গত ৬ জুলাই আনুষ্ঠানিক ভাবে সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সেই প্রক্রিয়া বেশি দূর এগয়নি। সরকারি সূত্রে শুক্রবার বলা হয়, চিনা সেনাবাহিনী পূর্ব লাদাখে সীমান্ত সংঘাত মেটানোর ব্য়াপারে আগ্রহী নয়। কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনীর কড়া জবাবের মুখে নিজেদের হঠকারিতার জন্য এমন পরিণতির সম্মুখীন হয়েছে যা তারা আগাম আঁচই করতে পারেনি। সূত্রের খবর, সামরিক আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে কেননা ভারতীয় সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়েছে যে, চিনা পিএলএ বাহিনীকে তিন মাসের বেশি সময়ের সীমান্ত বিরোধ মেটাতে হলে এবছরের এপ্রিলের আগের স্থিতাবস্থা ফেরাতে হবে। ভারতীয় সেনাবাহিনী চিনা সেনাকে পরিষ্কার বলেছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) কোনও বদল তারা মানবে না। চাপে পড়ে চিনা পক্ষ এখন মুখরক্ষার রাস্তা খুঁজছে।