ওয়াশিংটন: চিনের অবিশ্বাস্য আগ্রাসনের যথোপযুকক্ত জবাব দিয়েছে ভারত। এমনটাই মনে করেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পিও। তাঁর মতে, সীমান্ত সমস্যাকে উস্কানি দেওয়াটা বেজিংয়ের পুরনো অভ্য়াস। কোনও দেশের উচিত নয়, চিনের এই দাদাগিরিকে প্রশ্রয় দেওয়ার।


পূর্ব লাদাখে চিনা সেনার আগ্রাসন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পম্পিও বলেন, চিনা আগ্রাসন নিয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে আমার বহুবার আলাচনা হয়েছে। চিনারা অবিশ্বাস্যভাবে আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছে। ভারত সেরা জবাব দিয়েছে।


দীর্ঘ ৮ সপ্তাহ ধরে প্যাঙ্গং নদী, গালওয়ান উপত্যকা ও গোগরা হট স্প্রিং সহ পূর্ব লাদাখের একাধিক জায়গায় সংঘাত চলছে ভারত ও চিনের মধ্যে। গতমাসে পরিস্থিতির অবনতি হয়। গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার বর্বরোচিত হামলায় নিহত হন ২০ ভারতীয় জওয়ান। চিনের তরফেও ৪৩ জন হতাহত হয়। এরপরই, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সীমান্তঞ্চলে সামরিক বহর বৃদ্ধি করে উভয় দেশই।


তবে, রবিবার চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং লি-র সঙ্গে বৈঠক করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। এরপর সোমবার থেকে গালওয়ান ও হট স্প্রিং এলাকা থেকে বাহিনী প্রত্যাহার শুরু করে চিন। প্রসঙ্গত, ভারত-চিন সীমান্ত আলোচনায় ডোভাল ও ওয়াং হলেন দুদেশের বিশেষ প্রতিনিধি।


পম্পিও বলেন, এশিয়া অঞ্চল তথা সমগ্র বিশ্বে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শি জিনপিং ও তাঁর ব্যবহার সম্পর্কে একটা কথা বলতে চাই। (লাদাখে) চিনা কমিউনিস্ট পার্টির এই আগ্রাসনকে একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখলে ভুল হবে। একে বৃহত্তর পরিপ্রেক্ষিতে দেখা উচিত।


সম্প্রতি, বিশ্ব পরিবেশ আদালতে ভুটানের বিরুদ্ধে সীমান্ত সমস্যার মামলা দাখিল করেছে চিন। পম্পিও বলেন, হিমালয়ের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে ভিয়েতনামের সমুদ্র--- সীমান্ত সংঘাতকে উস্কানি দেওয়ার একটা অভ্যাস রয়েছে চিনের। বিশ্বের উচিত নয় এই ধরনের দাদাগিরিকে সমর্থন করা বা তাকে প্রশ্রয় দেওয়া।


চিনা কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে স্থল ও জলসীমান্তে সংঘাত শুরু করার অভিযোগ তুলে পম্পিও বলেন, খুব বেশি দেশ নেই, যারা সন্তুষ্টির সঙ্গে এটা বলতে পারবে যে, তারা যানে চিনের সার্বভৌমত্ব কোথায় শেষ হচ্ছে এবং চিন তা সম্মান করবে। ভুটানও এখন টের পাচ্ছে।


পম্পিওর মতে, এর বিরুদ্ধে সকলকে একজোট হওয়া প্রয়োজন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বিষয়টিকে ভীষণই গুরুত্ব দিয়ে বিচার করছেন। দক্ষিণ চিন সাগর ও পূর্ব চিন সাগরে একাধিক দেশের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতে জড়িয়েছে চিন। এই দুই সমুদ্রের একাধীক দ্বীপ দখঘল করে সেখানে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছে বেজিং।


চিনের দাবি, দক্ষিণ চিন সাগরের পুরোটা তাদের। বেজিংয়ের সেই দাবি খারিজ করেছে ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন্স, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই ও তাইওয়ান। মূলত খনিজ, তেল ও প্রাকৃতিক সম্পদে পূর্ণ এই জায়গাটি বাণিজ্যের একটি লাভজনক রুটও বটে।