নয়াদিল্লি: ভারতে করোনার দশম দশা এখনও আসেনি। তা দেখা যাবে আগামী বছরের শুরুতে, যদি ততদিনেও টিকা না বার হয়। এক গবেষণায় এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বা এমআইটি। তারা বলছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে এ দেশে দিনে ২.৮৭ লাখ করে মানুষ করোনা আক্রান্ত হতে পারেন।


এমআইটির স্লোন স্কুল অফ ম্যানেজমেন্টের তিন গবেষক হাঝির রহমানদাদ, টিওয়াই লিম এবং জন স্টারম্যান এ ব্যাপারে গবেষণা করেছেন। তাঁদের দাবি, যদি করোনার কোনও চিকিৎসা না বার হয়, তবে আগামী বছর মার্চ থেকে মের মধ্যে গোটা বিশ্বে ২০ থেকে ৬০ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হবেন। ভারতের অবস্থা হবে সব থেকে গুরুতর, তারপর থাকবে আমেরিকা (প্রতিদিন ৯৫,০০০ করে আক্রান্ত), দক্ষিণ আফ্রিকা (প্রতিদিন ২১,০০০ করে আক্রান্ত) ও ইরান (প্রতিদিন ১৭,০০০ করে আক্রান্ত)।

১. বর্তমান করোনা পরীক্ষার হার ও তার ফলাফল, ২. যদি গত পয়লা জুলাই থেকে প্রতিদিন ০.১ শতাংশ পরীক্ষা বেড়ে থাকে ও ৩. যদি একই হারে পরীক্ষা চলে কিন্তু একজন আক্রান্তের থেকে ৮ জনের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, এই তিনটি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে হয়েছে গবেষণা। এতে বলা হয়েছে, করোনা রুখতে যত দ্রুত ও যত বেশি সম্ভব পরীক্ষার কোনও বিকল্প নেই, পরীক্ষায় দেরি যত বেশি, বিপদ তত বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা।

যে তিনটি পরিস্থিতির ভিত্তিতে গবেষণা চলেছে, তার প্রথম ক্ষেত্রে অনুমান করা হয়েছে ৮৪টি দেশের ১.৫৫ বিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হবেন। কিন্তু যদি দ্বিতীয়টি হয়, অর্থাৎ প্রতিদিন ০.১ শতাংশ হারে পরীক্ষা বাড়ে তবে আক্রান্তের সংখ্যা কমে হবে ১.৩৭ বিলিয়ন। আবার যদি একই হারে পরীক্ষা চলে এবং ১ জন আক্রান্ত থেকে ৮ জনের অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সে ক্ষেত্রে অসুস্থের সংখ্যা হবে ৬০ কোটি।

ভারতের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক, বলছে এই গবেষণা। যদি করোনা ঝুঁকিকে ঠিকমত মোকাবিলা না করা হয় তবে তা চরম সঙ্কটের চেহারা নিতে পারে। ভবিষ্যতে পরীক্ষা কত হচ্ছে তার ওপর আর করোনা সংক্রমণ তেমন নির্ভর করবে না বরং মানুষ ও সরকারের সংক্রমণ রুখতে ইচ্ছাই শেষ কথা বলবে। গবেষকদের দাবি, গোটা বিশ্ব জুড়েই প্রকৃত করোনা আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে দেখানো হচ্ছে। তাঁদের হিসেবমত, এই মুহূর্তে ৮.৮৫ কতটি মানুষ করোনা আক্রান্ত, ১৮ জুন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৬ লাখ। যা সরকারি হিসেব, তার থেকে এই সংখ্যাদুটি যথাক্রমে ১১.৮ এবং ১.৪৮ গুণ বেশি।