নয়াদিল্লি: জোড়া বিস্ফোরণে শতাধিক মানুষের মৃত্য়ুর ঘটনায় ইরানের পাশে থাকার বার্তা দিল ভারত। এ দেশের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল X-এ লেখেন, 'ইরানের কেরমান শহরের ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে আমরা স্তম্ভিত ও শোকার্ত। এই কঠিন সময়ে ইরানের সরকার ও সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছি আমরা।'
যা ঘটেছিল,...
২০২০ সালে মার্কিন ড্রোন হামলায় মারা যান ইরানের IRGC-QF কম্যান্ডার কাসেম সোলেইমানি। গত কাল, বুধবার, তাঁর স্মৃতিতে কেরমানি শহিদ গোরস্থানে কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হন। ইরানের সরকারি সংবাদসংস্থা জানাচ্ছে, গোরস্থানের দিকে যাওয়ার রাস্তার দু'ধারে আগে থেকেই বোমা বসানো ছিল। এমন দু-দুটি বোমার, রিমোটে বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা, দাবি তেহরানের। হলে শতাধিকের মৃত্য়ু হয়, অসংখ্য মানুষ জখম হন। বুধবারের ঘটনার পর তীব্র আলোড়ন শুরু হয়েছে তেহরানে। ইরানের বিখ্যাত 'রেভোলিউশনারি গার্ড' এবং প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মহম্মদ আখবারের হুঙ্কার, এই রক্তপাতের যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। যে হাসপাতালে জখমদের চিকিৎসা চলছে, তার সামনে দাঁড়িয়েই বৃহস্পতিবার আখবার বলেন, 'যারা এই হামলা চালিয়েছে, সোলেইমানির সেনাদের হাতে তারা উপযুক্ত জবাব পাবে।' এখনও পর্যন্ত কোনও গোষ্ঠী এই সন্ত্রাসবাদী হামলার দায়স্বীকার করেনি। তবে মার্কিন প্রশাসন সূত্রে এর মধ্যেই দাবি করা হচ্ছে, সাধারণ ভাবে ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গিগোষ্ঠী এই ধরনের হামলা চালায়। যদিও অন্য একটি সূত্রে খবর, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এই ঘটনার জন্য ইজরায়েলের দিকে আঙুল তুলেছেন। বলেছেন, 'জায়নবাদীদের সতর্ক করছি, এই অপরাধ ও বাকি সমস্ত অপরাধের জন্য যে তোমাদের কড়ায়-গণ্ডায় মূল্য দিতে হবে তা নিয়ে কোনও দ্বিধা রেখো না।' সেই 'শাস্তি' যে অত্যন্ত কড়া হবে, সেটা মনে করিয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাইসি।
প্রেক্ষাপট...
গত ৭ অক্টোবর, ইজরায়েলের মাটিতে হামাসের হামলার পর থেকে সংঘর্ষের আগুন জ্বলছে পশ্চিম এশিয়া। ইজরায়েলের জবাবি হামলা ও অবরোধের জেরে গাজা ভূখণ্ডের সাধারণ মানুষের জীবন যে 'নরকসম' হয়ে উঠেছে, তা নিয়ে বার বার সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি। তার পরও যুদ্ধ থামার লক্ষণ নেই। বরং ইজরায়েলের অভিযোগ, হামাসের লড়াইয়ে নানা ভাবে মদত জোগাচ্ছে ইরান। তেহরানও তেল আভিভের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে কথা বলে চলেছে। সব মিলিয়ে এমনিতেই পশ্চিম এশিয়ার ভবিষ্যৎ অত্যন্ত টলোমলো। এবার, গত কাল কেরমানি শহরে জোড়া বিস্ফোরণে কোথাকার জল কোথায় গড়াবে, বোঝা কঠিন।