নয়াদিল্লি: উত্তর কোরিয়াকে ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের মেডিকেল সাহায্য পাঠিয়েছে ভারত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) অনুরোধ পেয়েই ভারত কিম জং উনের দেশকে এই সহায়তা পাঠিয়েছে বলে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন।
ভারতের উত্তর কোরিয়াকে এ ধরনের সাহায্য পাঠানো ব্য়তিক্রম, বিরল হিসাবেই দেখা হচ্ছে। মুখপাত্র বলেছেন, উত্তর কোরিয়ায় মেডিকেল সামগ্রীর ঘাটতির ব্যাপারে ভারত সহানুভূতিশীল, তাই যক্ষ্মা মোকাবিলায় ১০ লক্ষ মার্কিন ডলারের ওষুধ সরবরাহ করে মানবিক সহায়তার হাত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উত্তর কোরিয়ায় হু-এর চলতি যক্ষ্মা মোকাবিলা কর্মসূচির অধীনেই ভারত এই সহায়তা দিচ্ছে, ফলে তা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ ঘোষিত বিধিনিষেধের আওতায় তা পড়ছে না।
আন্তর্জাতিক মহলে একঘরে উত্তর কোরিয়ার ‘সুপ্রিম লিডার’ কিম জং উন-কে মার্শাল উপাধি প্রদানের অষ্টম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে পুষ্পস্তবক, চিঠিও পাঠিয়েছে ভারত। পিয়ংইয়ঙের বিদেশ সংক্রান্ত উপমন্ত্রী পাক মিয়ং হো-র হাতে গত ১৬ জুলাই তা তুলে দেন সেদেশে নিযুক্ত নয়াদিল্লির দূত অতুল মলহারি গোতসুরভে।
ভারত ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের আওতায় ২০১১ ও ২০১৬য় ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার করে খাদ্যসামগ্রী পাঠিয়েছিল উত্তর কোরিয়াকে। ২০১৮র মে মাসে উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়েছিলেন তত্কালীন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ। দু দশকে সেটাই ছিল কোনও ভারতীয় মন্ত্রীর প্রথম কমিউনিস্ট দেশটিতে সফর। ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বরে শেষ সেদেশে গিয়েছিলেন তত্কালীন অটলবিহারী বাজপেয়ি সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি, ষষ্ঠ পিয়ংইয়ং ফিল্ম ফেস্টিভেলে যোগ দিতে।
সিংহের সফর হয়েছিল কিম জং উন ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতা মুন-জা-ইনয়ের ঐতিহাসিক বৈঠকের পরপরই। দুই প্রতিবেশীর সীমান্তে অসামরিক জোনে হয়েছিল সেই বৈঠক।
সিংহ তাঁর সফরে ‘পরমাণু অস্ত্র প্রসারের বিপদ’ সম্পর্কে ভারতের উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন, ভারতের পড়শি এলাকায় পারমানবিক প্রসারের প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লির চিন্তার কথা উত্তর কোরিয়ার নেতাদের কাছে তুলেছিলেন। ভারত তখন থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সহযোগিতায় উদ্বিগ্ন। সূত্রের খবর, নয়াদিল্লির সন্দেহ, উত্তর কোরিয়া-পাকিস্তানের গোপন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, যার জেরে নয়ের দশকের মাঝামাঝি পাকিস্তানকে রোডং ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রযুক্তি পাঠানো হয়েছিল, আজও বহাল আছে।